নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর সক্রিয় হয়েছিল রাজ্য সরকার। খোদ কলকাতার বুকে তাই এবার তৈরি করা হবে বাজি হাব। ইতিমধ্যেই তার জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজও হয়ে গিয়েছে। ঠিক করা হয়েছে, ইএম বাইপাস সংলগ্ন মাঠপুকুর স্টপেজের কাছে তৈরি হবে বাজির হাবটি। সেটি কলকাতা পুরনিগমের(KMC) হাতে থাকা প্রায় ১৫ একর ফাঁকা জমি্র ওপর গড়ে উঠবে। বাজি ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট হাবের জন্য নির্ধারিত জমি দেখে। জানা গিয়েছে, রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের(Small Industry Department) অধীনে তৈরি হবে এটি। যেখানে সবমিলিয়ে মোট ৮০জন ব্যবসায়ীকে জায়গা দেওয়া যাবে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে এই বছর কালীপুজোর পরেই শুরু হবে কাজ। এছাড়াও, বারাসত, চম্পাহাটি, ধূপগুড়ি, মহেশতলা, পূর্ব মেদিনীপুর মিলিয়ে মোট ৬টি ক্লাস্টার তৈরি হবে। অর্থাত্ সবমিলিয়ে নতুন ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হতে চলেছে।
আরও পড়ুন মমতার বাংলাকে ২৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিশ্বব্যাঙ্কের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) প্রতিশ্রুতি মেনেই রাজ্যের ৬টি জেলায় গড়ে উঠবে এই বাজি ক্লাস্টার(Fireworks Cluster)। নবান্নের খবর, ক্লাস্টার তৈরির জন্য প্রতিটি জেলাতেই জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম ধাপে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মেদিনীপুর, বীরভূম, হুগলি এবং কলকাতার(Kolkata) ইএম বাইপাস লাগোয়া অঞ্চলে তৈরি হবে এই ক্লাস্টার। সেখানে এক ছাদের তলায় বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে বাজি বানাবেন কারিগররা। এতে একদিকে যেমন দূষণে লাগাম টানা যাবে, তেমনই কমবে দুর্ঘটনা। ক্লাস্টারে অন্তত ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন নবান্নের কর্তারা। ক্লাস্টারগুলিতে বিনিয়োগের পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা। এর মধ্যে আগামী ২৩ অগাস্টে নবান্ন থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একটি ক্লাস্টারের আনুষ্ঠানিক সূচনা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। চম্পাহাটি বা মহেশতলা – দু’টির মধ্যে যে কোনও একটির সূচনা করবেন তিনি। প্রতি ক্লাস্টারে বাজি ওয়্যারহাউস (ম্যাগাজিন) ছাড়াও একটি করে দমকল কেন্দ্র এবং রিসার্চ সেন্টার থাকবে।
আরও পড়ুন পিএম কিষান প্রকল্প নিয়ে তদন্ত করতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বাংলায়
কলকাতার ইএম বাইপাসের পাশে যে ক্লাস্টার গড়ে উঠবে, সেখানে ৮০টি স্টল থাকবে। কলকাতার সব বাজি ব্যবসায়ীকে সেখানে তুলে আনা হবে। বছরভর চলবে বাজি বাজার। এ ছাড়াও প্রত্যেক জেলায় বাজি বাজার চালু করতে এসপি, ডিএম-দের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। বাজি ক্লাস্টার চালুর পাশাপাশি সবুজ আতসবাজি তৈরিতে রাজ্যের শিল্পীদের প্রশিক্ষণের কাজও শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের হিসেব, এ পর্যন্ত ৩০০ জনের মতো প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। মহেশতলা, হুগলির বেগমপুর এবং বর্ধমানে তিন দফায় প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছে। দুই দিনের ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে লাইট এবং স্পার্কলারের ওপর ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণের পর শিল্পীরা যে বাজি তৈরি করবেন, তার নমুনা পাঠাতে হবে নাগপুরের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট-এ। তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে দমকলের কাছে আবেদন করতে হবে। দমকল ছাড়পত্র দিলে জেলাশাসকরা চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন।