নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে কোরাস কণ্ঠে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বিজেপি নেতারা। কিন্তু তাদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন না রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রবিবার এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান বলেছেন, ‘রাজ্যে পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, এটা সত্যি নয়। হ্যাঁ, তবে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে গুন্ডাদের দাপাদাপি রয়েছে।’ আ্ইনশৃঙ্খলার অবনতির পুরো দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের কাঁধেও চাপাতে চাননি রাজ্যপাল। বরং পূর্বসূরি বাম সরকারকে্ও এর জন্য কাঠগড়ায় তুলেছে তিনি। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এমন মন্তব্যে হাড়ে-হাড়ে চটেছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
গত জানুয়ারি মাসে সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপরে এবং শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এনআইএ’র আধিকারিকদের উপরে তথাকথিত হামলা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। লোকসভার ভোট প্রচারে এসেও দুই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির ছোট-বড় নেতা এবং পদ্ম শিবিরের ধামাধরা দালাল সংবাদমাধ্যমের একাংশও ‘গেল গেল’ রব তুলেছে। কিন্তু এদিন অন্য সুর শোনা গেল রাজ্যপালের গলায়।
রাজভবনে বসে এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সি ভি আনন্দ বোস বলেন, ‘আমি সন্দেশখালিতে গিয়েছিলাম। মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাঁরা শান্তি ও সম্মান নিয়ে বাঁচতে চান বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তাদের সেই সম্মান ও শান্তির সঙ্গে বসবাসের আশাকে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। রাজ্যের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, এই ধরনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। কিছু এলাকায় গুন্ডারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু তার মানে মোটেও এটা নয় যে, গোটা রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।’ রাজ্যের বিক্ষিপ্ত অঞ্চলে গোলমাল ও অশান্তির জন্য তৃণমূল সরকারকে পুরোপুরি দায়ী করতে চাননি সিভি আনন্দ বোস। বরং পূর্বতন বাম সরকারকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘সন্দেশখালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় যে অশান্তির ঘটনা ঘটে চলেছে, তা এই সরকারের (তৃণমূল) সময়েই প্রথম, তা নয়। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ এটা উত্তরাধিকার সূত্রেই বর্তেছে।’