নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকারকে দেশের ক্ষমতার ভরকেন্দ্র থেকে উৎখাত করতেই গড়ে উঠেছে বিজেপি(BJP) বিরোধী মহাজোট INDIA। সেই জোটে সামিল হয়েছে কংগ্রেস(INC), তৃণমূল(TMC) ও বাম(Left) সহ মোট ২৮টি দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চেয়েছিলেন মুম্বইয়ের বৈঠকেই আসন রফার ফর্মুলা বার হয়ে আসুক। চেয়েছিলেন বাংলার(Bengal) ৪২টি আসনের কে কোথায় প্রার্থী দেবে সেটি নিষ্পত্তি হয়ে যাক। সূত্রের দাবি গতকালের বৈঠকে সেই বিষয়টিও নাকি তুলেছিলেন মমতা। কিন্তু আপত্তি তোলেন সীতারাম ইয়েচুরি। আবার প্রদেশ কংগ্রেসের একটা অংশ বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে জোটই চাইছে না। দলের বাকি নেতারা জোট চাইছেন আবার নূন্যতম ১২টি আসন ছাড়ার দাবি নিয়ে। এই অবস্থায় তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জোটে থেকেও জোট হচ্ছে না ধরে নিয়েই এগোতে চাইছেন মমতা। আর সেই কারণেই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীদের বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চান তিনি।
কার্যত মুম্বইয়ে INDIA’র বৈঠকে মমতা ও অভিষেক দুইজনই বুঝে গিয়েছেন, তাঁরা যে ফর্মুলায় আসন বন্টন চাইছেন তা মানতে নারাজ বামেরা। সেই প্রস্তাবে আপত্তি আছে অনান্য আরও বেশ কিছু দলের। সেই হিসাবে বাংলার মাটিতে বিজেপির বিরুদ্ধে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয়। বামেরা এবং প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা কার্যত জোট চাইছেন না তৃণমূলের সঙ্গে। তাঁরা শুধু নিজেদের মধ্যেই জোট চাইছেন। সেই জোটে সামিল হতে পারে নওশাদ সিদ্দিকির ISF-ও। অর্থাৎ বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে একাই লড়াই করতে হবে তৃণমূলকে। সেই লড়াইয়ে ভোট কাটার খেলায় নামবে বাম-কংগ্রেস ও আইএসএফ জোট। এই ছবিকে ধরে নিয়েই মমতা চাইছেন প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিতে। কেননা হয়তো মোদি সরকার ভোট এগিয়ে এনে ডিসেম্বরে করার চেষ্টা করতে পারে। তাই সময় থাকতে থাকতেই নিজেদের ঘর গুছিয়ে রাখতে চাইছেন মমতা।
তবে সমীক্ষা বলছে, তৃণমূলের সঙ্গে জোট না গড়ার মাশুল গুণতে হবে বাম ও কংগ্রেসকে। কেননা সেক্ষেত্রেও সম্ভাবনা থাকছে ২১’র ছবিটাই ফিরে আসা। অর্থাৎ রাজ্য থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে থেকে যাবে বাম ও কংগ্রেস। রাজ্যের মানুষের ভোট ভাগ হয়ে যাবে মমতা বনাম মোদির মধ্যে। সেখানে কলকে পাবে না বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ। তবে এক্ষেত্রে লাভ হবে তৃণমূলেরই, যেমনটা হয়েছিল একুশের ভোটে। দেখা যাবে তৃণমূলের আসন তো বেড়েই যাবে একধাক্কায় অনেকটাই সেই সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির হাতে থাকা আসনও হাতছাড়া হবে পদ্মশিবিরের। হুগলি, বনগাঁ, রানাঘাট, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, বর্ধমান-দূর্গাপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি সেক্ষেত্রে বিজেপির হাতছাড়া হতে পারে। তবে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, আরামবাগ, কাঁথি ও তমলুক আসনে দুই দলের কড়া লড়াই হবে।