নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজেকে বিশাল বড় মাপের নেতা ভাবেন তিনি। দলের দ্ভায় দলের নামটাই অনেক সময় উচ্চারণও করেন না তিনি। খালি ‘আমি আমি আমি’। আমিত্বে মোড়া তিনি। গত শনিবার দলেরই এক সভায় দলের নেতাদের জ্ঞানভাষণ দিয়ে বলেছিলেন তিনি, ‘মঞ্চে ভাষণ দিয়ে বড় বড় কথা বলবে? হবে না! চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম। নিজের বুথ জিততে হবে। নিজের এলাকা জিততে হবে। নিজের অ্যাসেম্বলি জিততে হবে। নিজের জেলা জিততে হবে। তার পর গিয়ে ভাষণ দিতে হবে।’ তাঁর সেই বক্তব্যে রীতিমত ক্ষিপ্ত ও অপমানিত বোধ করেন দলেরই একটা বড় অংশের নেতারা। সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই দেখা মুখে বড় বড় বাতেলা আউড়ে দলের নেতাদের জ্ঞান ভাষণ দিলেও তিনি নিজেও তাঁর নিজের এলাকা ধরে রাখতে পারছেন না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁরই এলাকায় দলের জেতা পঞ্চায়েত সমিতি চলে গেল তৃণমূলের দখলে। আর এরপরে পরেই তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ দলের নেতাদের পাল্টা বাণ, ‘গাঁ মানে না আপনি মোড়ল।’
আরও পড়ুন বিরোধিতার সুর না বদলালে বাংলায় ৪২ আসনেই লড়বে তৃণমূল
গত শনিবার সায়েন্স সিটিতে বসেছিল বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) বৈঠক। সেখানেই দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) বেশ বড় মুখে গাল ফুলিয়ে বলেছিলেন, ‘নিজের এলাকায় সংগঠন শক্তিশালী করুন। নিজের এলাকা নিজেকে রাখতে হবে। মঞ্চে ভাষণ দিয়ে বড় বড় কথা বলবে? হবে না! চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম। নিজের বুথ জিততে হবে। নিজের এলাকা জিততে হবে। নিজের অ্যাসেম্বলি জিততে হবে। নিজের জেলা জিততে হবে। তার পর গিয়ে ভাষণ দিতে হবে।’ সেই বুলির জেরে শুভেন্দুর ওপর বেজায় খাপ্পা হয়ে ওঠেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। কিন্তু সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই দেখা গেল শুভেন্দু অপরকে লেকচার দিলেও আদতে তিনি তাঁর এলাকারও জমি ধরে রাখতে পারছেন না। তাঁর নিজ জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapur) কাঁথি মহকুমার খেজুরি-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি সদ্য সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয় বিজেপি। সমিতির ১৫টি আসনের মধ্যে বিজেপি জেতে ৯টি আর তৃণমূল(TMC) ৬টি। কিন্তু রবিবার ২ বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতেই সমিতিতে এখন বোর্ড গঠনের দৌড়ে এগিয়ে গেল তৃণমূল।
আরও পড়ুন উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করতে জন্ম নয়া জঙ্গি সংগঠনের
খেজুরির এই ঘটনা সামনে আসতেই এখন বঙ্গ বিজেপিতে শুভেন্দু বিরোধীরা কার্যত তেঁড়েফুঁড়ে উঠেছেন। তাঁদের দাবি, উনি নিজে যেখানে নিজের জেলায় দলকে জেলা পরিষদে জেতাতে পারেন না, বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সমিতিতে জেতাতে পারেন না, জেতা সমিতির সদস্যদের দলে ধরে রাখতে পারেন না, সেখানে তিনি অন্যকে লেকচার মারতে আসেন কেন? আয়নায় দাঁড়িয়ে আগে নিজেকে দেখুন তারপর অন্যকে লেকচার মারবেন। ভাষণ বিজেপির নেতারা মারেন না, উনি নিজেই ভাষণ মেরে বেড়ান। দলকে কটা নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখাতে পেরেছেন যে দলের নেতাদের ভাষণ দিতে এসেছেন!