নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রতি বছর কলকাতার বুকে পুজোর সময় রাস্তাঘাটে বাইকবাজদের(Bikers) দাপট চোখে পড়ে সবার। বাইকবাজদের সেই দাপট ঠেকাতে নাজেহাল হন পুলিশের কর্মী থেকে আধিকারিকেরা। যদিও সেই বাইকবাজদের সংখ্যা এত বেশি থাকে যে কার্যক্ষেত্রে কিছুই করে উঠতে পারেন না রাস্তায় ডিউটিতে থাকা কলকাতা পুলিশের কর্মী বা আধিকারিকেরা। এবার কিন্তু সেই জায়গাতেই কড়া নজর দিতে চাইছেন শহরে আইনের রক্ষকেরা। কার্যত শারদোৎসবে(Durga Puja) কলকাতা ও শহরতলির বুকে বাইকবাজদের দাপট ঠেকাতে ও তাঁদের আইনের অনুশাসন পড়াতে কড়া হাতে হাল ধরতে চলেছেন শহরের শ্বেত উর্দিধারীরা(Kolkata Police)। হেলমেটবিহীন বাইক আরোহী, ট্রিপল রাইডিং, সিগনাল লঙ্ঘন সহ দল বেঁধে বাইক নিয়ে দাপাদাপি করতে দেখলেই এবারের পুজোয় জরিমানা(Fine) নিশ্চিত বাইকবাজদের।
মাথায় হেলমেট পরলে চুল খারাপ হয়ে যাবে, তাই পুজোয় নো হেলমেট। বন্ধুরা সবাই মিলে দল বেঁধে ঠাকুর দেখবো, তাই এক বাইকে ৩জন বা ৪জন। এই কয়দিন ছাড় দিতেই হবে তা সে যত রাতেই বাইক চেপে ঘুরে বেড়াই না কেন, যত জোরেই বাইক ছোটাই না কেন! কার্যত শারদোৎসবের দিনগুলিতে নিয়ম না মানার এই অলিখিত নিয়ম তৈরি করে নিয়েছিল শহরের বাইকবাজরা। কিন্তু এবারের পুজোয় এই বাইকবাজদেরই কড়া ভাবে অনুশাসনের পাঠ পরাতে কোমর বাঁধছেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিক থেকে কর্মীরা। বিশেষ করে যারা ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ঘাড়েই চাপছে গুরু দায়িত্ব। কিন্তু হঠাৎ এই কড়া পদক্ষেপ কেন? লালবাজারে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের দাবি, গতবছর পুজোয় দু’টি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিন বাইক আরোহী। উল্টোডাঙা উড়ালপুল থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের। তদন্তে জানা যায়, পুজোর রাতের উড়ালপুলে মাত্রাতিরিক্ত গতিতে বাইক ছোটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি। উড়ালপুলের ওপর থেকে নীচে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরে আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটে ইএম বাইপাসে। সেখানেও গতির বলি হন সদ্য বিবাহিত এক যুগল। এবছরের পুজোয় এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে প্রথম থেকেই সচেতন লালবাজার।
ঠিক কী হতে চলেছে এই বছরের পুজোয়? লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের পুজোয় চতুর্থী থেকেই শহরজুড়ে বাইকের বেপরোয়াভাব রুখতে অভিযানে নামছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। বাইকের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে শহরজুড়ে চলবে নাকা চেকিং(Naka Checking)। তার জন্য রাস্তায় থাকবে বিশেষ টিম। বিনা হেলমেটের যাত্রী দেখলেই তাঁদের কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ গিয়েছে সমস্ত ট্রাফিক গার্ডের তরফে। সেই সঙ্গে পুজোয় শহরের বিভিন্ন এলাকা পর্যবেক্ষণে বার হবেন ট্রাফিক বিভাগের পদস্থ কর্তারা, তা সে দিন হোক কী রাত। শহরের যে সমস্ত এলাকায় বাইক বাহিনীর দাপট বেশি, সেগুলি ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। পুজোর সময় অনেকেই হেলমেট হাতে নিয়ে বাইক চালান। কোনও অফিসার ধরলেই চুলের স্টাইল খারাপের বাহানা দেন তাঁরা। কিন্তু এবছর আর কোনও ছাড় নয়। পুজোয় বাইক নিয়ে বেরলে হেলমেট পরতেই হবে। না পরলেই জরিমানা। বেশি বাড়বাড়ি করলে পুলিশ গ্রেফতারও করবে।