নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চমীর রাতেই মহানগরের রাজপথে জনস্রোত ছক্কা হাঁকালো। একদিকে যখন ভারত বাংলাদেশকে চারে চার করে দিয়ে বিদায় জানিয়ে অষ্টমীতে পরবর্তী ম্যাচের জন্য পৌঁছে গেল ঠিক সেই সময় বৃহস্পতিবার মহানগরী জনস্রোতে ভেসে গেল। আগাম ভিড়ের আশঙ্কা করে কলকাতা পুলিশ দুপুরের পর থেকেই রাস্তায় নেমেছিল। রাত পৌনে দশটা নাগাদ ‘এই মুহুর্তের’ পক্ষ থেকে লালবাজার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের (Lalbazar Traffic Controll Room)সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, ‘শহরের প্রতিটি মন্ডপে যথেষ্ট ভিড় রয়েছে। তবে ভিড় সামলে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে সচল রাখতে কলকাতা পুলিশ কাজ করে চলেছে। শহরের কোন রাস্তায় যানজট নেই। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’এদিকে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় অঘটন এড়াতে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের লেজার শো বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তবে তাতে ভিড়ের কোন খামতি হয়নি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে নবমী তিথি থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। তাই এক বছর অপেক্ষা করে থাকা আমজনতা নেমে পড়েছে রাস্তায়। পরিবার-পরিজন প্রিয় জনকে সঙ্গে নিয়ে এক মন্ডপ থেকে অপর মণ্ডপে ছুটে যাচ্ছে ঠাকুর দেখতে। কারণ অষ্টমী তিথি পর্যন্ত আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী শুষ্ক থাকবে ওয়েদার। তাই আগেভাগে বড় মণ্ডপের ভালো প্রতিমা দর্শনের সুযোগ ছাড়তে নারাজ কেউই। গত কয়েকদিন ধরে যানজটে নাকাবন্দি কলকাতা মহানগরী ও ভিআইপি রোড পঞ্চমীর সন্ধ্যের পর থেকে ছিল যান চলাচলে তুলনামূলক কিছুটা ভালো। ট্রাফিক পুলিশ থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবক, সিভিক ভলেন্টিয়ার, এনসিসি কর্মী সকলেই রাস্তায় ছিলেন। কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police)রেকর্ড অনুযায়ী সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার থেকে শুরু করে সুরুচি সংঘ চেতলা অগ্রগামী, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব, কুমারটুলি পার্ক, আহিরিটোলা বাগবাজার সার্বজনীন, বেনিয়াটোলা সর্বত্র পঞ্চমীর সন্ধ্যে থেকে ভিড় ছিল নজর কাড়ার মত। হাতিবাগান সার্বজনীন থেকে একডালিয়া, সিংহী পার্ক সর্বোত্র ঠাকুর দেখার পাশাপাশি ছিল সেলফি তোলার ধুম।
প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়া এভারগ্রীন(Ekdalia Evergreen) ক্লাবের পুজা মন্ডপকে ঘিরে ছিল সাধারণ মানুষের চরম উন্মাদনা। পঞ্চমীর সন্ধ্যে থেকে রাত যত গড়িয়েছে ততই ভিড় বেড়েছে উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র। পিছিয়ে ছিল না জেলাগুলিও। কল্যাণী থেকে শুরু করে ব্যারাকপুর সোদপুর সর্বোত্তই ছিল মানুষের নজর কাড়া ভিড়। তবে লালবাজার কন্ট্রোলরুম এবং বিধান নগর কমিশনারেটের ট্রাফিক চলাচল যাতে বাধা প্রাপ্ত না হয় তা নিয়েছিল বিশেষ নজরদারি। হাতে এখনো পাঁচটি দিন বাকি। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় জনশ্রুত যেভাবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে তাতে ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমীতে শহর গড়িয়ে জেলা যে দুর্গাপুজোর ভিড়ে রেকর্ড গড়বে। তাতে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত প্রশাসন। গত দু’বছর করোনা কাল কেটে যাওয়ার পর এবছর দুর্গাপুজোয় মানুষ আবারও রাজপথে বাঁধনহীন আনন্দে শামিল হয়েছে।এই ভিড়ের মধ্যে অতি সংযোজন ছিল সেলিব্রেটিদের মন্ডপে মন্ডপে আনাগোনা। সুরুচি সংঘে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ঢাকের তালে কোমর দোলালেন সাংসদ নুসরাত জাহান। এমনকি মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ঢাকো বাজালেন অপর সাংসদ এবং অভিনেতা দেব।