নিজস্ব প্রতিনিধি: এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু(Student Death)। আর সেই মৃত্যুর জেরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল একটি স্কুল। একই সঙ্গে ওই স্কুলের প্রায় দেড় হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল। ঘটনার জেরে রীতিমত মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে ওই সব পড়ুয়াদের অভিভাবকদের। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার কথাও ভাবছেন বলে জানা গিয়েছে। নজরে দক্ষিণ পূর্ব কলকাতার(Kolkata) কসবা(Kasba) এলাকার Silver Point School। দিন ৩-৪ আগে এই স্কুলেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ওই স্কুলেরই হয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শানের। মূল অভিযোগ, সংখ্যালঘু সমাজের কিশোর হওয়ায় ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষের জেরে তাঁকে পিটিয়ে খুন করে স্কুলের ওপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে নোটিস(Notice) দিয়ে ওই স্কুল অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গত ৪ সেপ্টেম্বরে শেখ শানের মৃত্যুর জেরে তার বাবা শেখ পাপ্পু স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানসিক চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি এটাও জানিয়েছিলেন যে, তার ওপর বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষোভ ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। কেননা কোভিডকালে ওই স্কুলের বেতন কমানো হচ্ছিল না বলে তিনি অন্য অভিভাবকদের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একত্রিত করে স্কুল কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বাড়িয়েছিলেন। তার জেরে অভিভাবকদের চাপে ৩৩ শতাংশ বেতন কমানোও হয়েছিল। সেই সময়েইউই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা নাকি তাঁকে বলেছিলেন, ‘আপনাকে চিহ্নিত করে রাখা হল’। তখনই তিনি বুঝেছিলেন, তাঁর ছেলের ক্ষতি করার পরিকল্পনা ফেঁদেছেন তাঁরা। এখন তাঁর ধারনা, স্কুলেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। আর এই কারণেই তিনি স্কুলের প্রধানশিক্ষক, সহকারী প্রধানশিক্ষক এবং আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০২ এবং ধারা ১২০বি অনুযায়ী খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিতে গিয়ে অভিভাবকেরা দেখেন, Silver Point School’র মূল ফটকে একটি নোটিস ঝোলানো আছে। ওই নোটিসে রয়েছে স্কুলের প্রিন্সিপালের স্বাক্ষর। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনাটিকে ‘অনভিপ্রেত’ বলে অভিহিত করে ওই নোটিসে বলা হয়েছে, জল্পনার ভিত্তিতে স্কুলকে খারাপ ভাবে দেখানো হচ্ছে। একটি পরিবার হিসাবে সোমবারের ঘটনায় যে তাঁরা শোকগ্রস্ত, সে কথাও জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল ওই স্কুল। পড়ুয়াদের নিরাপত্তাই তাঁদের কাছে অগ্রাধিকার পাবে। তাই পরবর্তী নোটিস না দেওয়া অবধি স্কুল বন্ধ থাকবে।