নিজস্ব প্রতিনিধি: বাড়ি তাঁর কলকাতায়(Kolkata)। দেহ মিলেছে দ্বিখন্ডিত অবস্থায়। কর্মস্থল কলকাতারই গার্ডেনরিচে। অথচ সন্ধান মিললো তাঁর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। বাড়ি থেকে তিনি বেড়িয়েছিলেন দুপুরে। সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী ম্যাসেজ পেয়েছিলেন, ‘আমার মৃতদেহ নিতে হলে এখানে এসো।’ কোথায় আসতে হবে সেটাও ছিল ম্যাসেজে। ম্যাসেজ আসার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল। সেই ঘটনার ঘন্টা আড়াইয়ের মধ্যে এসেছে মৃত্যুর খবর। আর এই মৃত্যু নিয়েই এখন ক্রমশ রহস্য দানা বাঁধছে। নজরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের(South Eastern Railway) কর্মচারী সমবায় ব্যাঙ্কের ডেপুটি চিফ ম্যানেজার ইয়েরা সাস্থা স্বরূপের(৩০) মৃত্যু।
গতকাল অর্থাৎ শনি সন্ধ্যায় খড়গপুর-মেদিনীপুর রেল শাখার রাজগ্রাম রেলগেট থেকে একটু দূরে রেললাইনে দ্বিখন্ডিত অবস্থায় মেলে তাঁর দেহ। স্বরূপের বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের পেনডুরথি থানার কৃষ্ণনগর এলাকা হলেও তিনি এক বছর আগে গার্ডেনরিচে কাজে যোগদান করেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। কলকাতায় চেতলা এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সেখান থেকেই দুপুরে বেড়িয়ে যান। সন্ধ্যায় আসে তাঁর মৃত্যুর খবর। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, গতকাল দুপুরে কলকাতার চেতলার ফ্ল্যাট থেকে সোজা অফিসেই গিয়েছিলেন স্বরূপ। তারপর সেখান থেকে বাইক নিয়ে তিনি বেরিয়েছিলেন। কিন্তু কোথায় যাচ্ছেন, সেই বিষয়ে কাউকেই কিছু জানাননি। প্রশ্ন উঠছে, যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নেওয়া যায় তিনি ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাহলে কলকাতা থেকে প্রায় ১৫০কিমি দূরে তিনি কেন এলেন? তাঁর বাইকই বা কোথায় গেল? জিআরপি(GRP) সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর থেকে হাওড়াগামী একটি লোকাল ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দেহের কাছ থেকেই মিলেছে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি হাতঘড়ি।
এদিকে কলকাতার গার্ডেনরিচে তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, অফিস থেকে বেরনোর সময় তাঁর টেবিলের ল্যাপটপ খোলা অবস্থায় ছিল। ফলে সকলেই ভেবেছিলেন, কোনও কাজে হয়ত বেরিয়েছেন। সময় মতো চলে আসবেন। কিন্তু অফিস টাইম শেষ হওয়ায় শুরু হয় খোঁজখবর নেওয়া। তার মধ্যেই সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে স্ত্রীর ফোনে ওরকম একটি মেসেজ পৌঁছনোর পর সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরে রাতে মৃত্যুর খবর মেলে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, খড়গপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের অনেক মানুষ থাকেন। তাঁদের কারও সঙ্গে ওই যুবকের যোগাযোগ ছিল। সেই কারণেই তিনি খড়গপুরে এসেছিলেন। বাকিটা রহস্য। আত্মহত্যা নাকি খুন। আত্মহত্যা হলে কেনই বা তিনি তা করলেন।