নিজস্ব প্রতিনিধি: রামনবমী(Ramnabami) দিন যে মিছিল ঘিরে হাওড়া(Howrah) শহরের শিবপুরে(Shibpur) সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল সেই মিছিলেই পিস্তল হাতে নাচতে দেখা গিয়েছিল এক যুবককে। পরে সেই ঘটনা ট্যুইট করে তুলে ধরেন তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। হাওড়ার ঘটনার তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশ এবং সিআইডি একযোগে এই যুবকের সন্ধান শুরু করে। সোমবার রাতে তাকে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেফতারও করেন তাঁরা। এদিন রাতেই তাকে কলকাতায় আনা হচ্ছে। আগামিকাল তাকে তোলা হবে হাওড়া আদলতে। সেই যুবকের নাম সুমিত সাউ(Sumit Shaw)। এবার সে যে সক্রিয় বিজেপি কর্মী তার স্বপক্ষে প্রমাণ সামনে চলে এসেছে। দুটি ছবি সামনে এসেছে। তার একটিতে এক বিজেপি(BJP) নেতার সঙ্গে ও অপরটিতে বিজেপির পতাকা হাতে অনান্য কর্মীদের সঙ্গে সুমিতকে দেখা যাচ্ছে। যা কার্যত বলে দিচ্ছে সে সক্রিয় বিজেপি কর্মী। একইসঙ্গে বিজেপি নেতা উমেশ সাউ(Umesh Shaw) স্বীকারও করে নিয়েছেন কার্যত যে সুমিত বিজেপি কর্মী।
আরও পড়ুন বিজেপির মুখোশ খুলে দিয়ে পুলিশের হাতে হাওড়ার বন্দুকধারী
এদিন সুমিতের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, সুমিত পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে তাকে মুঙ্গের থেকে গুন্ডা ভাড়া করে আনতে বলা হয়েছিল। তার জন্য তাকে মোটা অঙ্কের টাকাও দেওয়া হয়। তাকে বলেই দেওয়া হয়েছিল মিছিল থেকে গুলি ছুঁড়তে। কুণালের আরও দাবি, ‘একে কারা নিয়ে এল? সে রিভলভার পেল কোথা থেকে? সেফ প্যাসেজ করে কারা বিহারে পৌঁছে দিল? শুধুই কী রিভলভার এনেছিল নাকি সঙ্গে করে বোমাও এনেছিল? ওকে পিস্তল হাতে বিজেপির মিছিলেও দেখা গিয়েছে। ওকে বলেই দেওয়া হচ্ছে যাও হাঙ্গামা বাঁধাও, যাও গুলি করো। যাতে আমরা এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনাতে পারি। বিজেপি এখানে মুঙ্গের চক্র চালাচ্ছে। মুঙ্গের থেকে ভাড়াটে গুন্ডার পাশাপাশি বোমা-পিস্তন আনাচ্ছে। কারা বাইরে থেকে লোকজনকে এনে রামনবমীর মিছিল করাচ্ছে, তার তদন্ত হোক। সবটাই বিজেপির চক্রান্ত।’
আরও পড়ুন ‘রাম নবমীর মিছিলে বন্দুক নিয়ে নৃত্য করছে’, গেরুয়াকে নিশানা মমতার
সুমিতের ঘটনা প্রসঙ্গে শুধু কুণালই নয়, এদিন দিঘা থেকে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছেন, ‘এই যে দিঘা এসেছি একাধিক কাজ করতে। কিন্তু আমাকে সারাক্ষণ সতর্ক থাকতে হচ্ছে। কে কখন অশান্তি বাঁধায়, এই ভেবে। বাইরে থেকে গুন্ডা এনে বিজেপি বাংলায় অশান্তির চেষ্টা করছে। কিন্তু ওরা জানে না, বাংলার মানুষ এসব অশান্তি পছন্দ করে না, তারা রুখে দাঁড়াবেই। অশান্তিতে কেউ উসকানি দেবেন না, শান্তি বজায় রাখুন। বিজেপি বাইরে থেকে গুন্ডা এনে, অস্ত্র এনে বাংলায় অশান্তি করার চেষ্টা করছে। রামনবমীর মিছিলে বন্দুক হাতে নাচ! রাম কি ওর কানে কানে বলে গিয়েছিল, আমার পুজোয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল করো? রাম তো প্রজাদের ভালবাসতেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। তাহলে কেন তাঁর নামে পুজোয় অস্ত্র মিছিল হবে? এসব বাংলার সংস্কৃতি নয়। দয়া করে আপনারা প্ররোচনায় পা দেবেন না। অশান্তিতে উসকানি দেবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। আমরা সকলে শান্তির পক্ষে। যারা অশান্তি বাঁধাতে চাইছে, তাদের মুখের উপর জবাব দিতে হবে।’
আরও পড়ুন ‘ওরা ভোট লুঠ করে জিতেছে, আমি ছেড়ে কথা বলবো না’ কড়া বার্তা মমতার
এদিকে, হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রাই সুমিত কাণ্ডে গেরুয়া শিবিরকে আরও অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন। কেননা তিনি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সুমিত বিজেপি কর্মী। তিনি জানিয়েছেন, ‘যে ছেলেটা ধরা পড়েছে, তার মা জানিয়েছে যে ছেলে যেখান থেকে টাকা পেত, সেখানেই যেত। ২০২১ এ তাকে বিজেপির কয়েকটি মিছিলে দেখা গিয়েছে। সে জানত, কোথায় টাকা পাওয়া যাবে। তাহলেই বুঝুন সে ছেলে কেমন? তাকে তো গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু এটা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে বেশি।’ কিন্তু উমেশের এই বক্তব্যই এখন বঙ্গ বিজেপির মুখ পোড়াচ্ছে।