নিজস্ব প্রতিনিধি: মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনের গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে ১১টি গণনাকেন্দ্রে। এবারে বোরো ভিত্তিক গণবনা হচ্ছে প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে। সেখানেই প্রথম রাউন্ডে পোস্টাল ব্যালট গণনা করা হচ্ছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রথম এক ঘন্টায় যে ট্রেন্ড উঠে আসছে তা কিন্তু রাজ্যের শাসক দলের অনুকূলেই। শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে সকাল ৯টা পর্যন্ত তৃণমূল ৪৫টি ওয়ার্ডে লিড তুলেছে বলে জানা গিয়েছে। বিরোধীদের মধ্যে বিজেপি ৩টি ওয়ার্ডে, বাম ও কংগ্রেস ১টি করে ওয়ার্ডে এবং নির্দলেরা ২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছেন। অর্থাৎ প্রাথমিক ট্রেন্ড বলছে পুরসভায় এবার প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে আসতে পারে বিজেপি। তুলনায় বড় ধাক্কা আসতে চলেছে বাম ও কংগ্রেসের দিকে। চমক হিসাবে অবশ্যই থাকবে নির্দলদের প্যারফর্মান্স।
এবারের নির্বাচনে শাসক শিবিরে হেভিওয়েট প্রার্থীদের অভাব ছিল না। বরঞ্চ বিরোধী অপেক্ষা শাসকদের পক্ষেই হেভিওয়েটদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। কে না ছিল সেই তালিকায়! রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ তথা প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যান মালা রায়, প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা বিধায়ক অতীন ঘোষ, বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরপারিষদ দেবাশিষ কুমার, বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরপারিষদ দেবব্রত মজুমদার, প্রাক্তন পুরপারিষদ তারক সিং, প্রাক্তন পুরপারিষদ বৈশ্বানর চ্যাটার্জী, ৮ নম্বর বোরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সন্দীপরঞ্জন বক্সি, ৯ নম্বর বোরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন মালাকার, ১২ নম্বর বোরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুশান্ত কুমার ঘোষ, ১৩ নম্বর বোরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ প্রমুখরা। এছাড়াও নজরকাড়া প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন সাংসদ শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন, অভিনেত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়িকা রত্না চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের প্রয়াত বাম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরা গোস্বামী, রাজ্যের অপর প্রয়াত নেতা তথা মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সুযোগ্যা শিষ্যা সুদর্শনা মুখার্জী, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভ্রাতৃবধূ জুঁই বিশ্বাস, রাজ্যের অপর এক মন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজা, রাজ্যের আরেক মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ বসু প্রমুখরা। এদের বেশির ভাগই প্রথম রাউন্ডের গণনায় এগিয়ে আছেন।
শহরের বোরো গুলির দিকেও চোখ রাখলে দেখা যাবে সবকটি বোরোতেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। ১৬টি বোরোর মধ্যে এমন কোনও বোরো নেই যেখানে বিরোধীরা এগিয়ে রয়েছেন। তবে শহরের ১৫ নম্বর বোরো ও ৫ নম্বর বোরোতে কিছুটা হলেও ভাল ফল করছে বিরোধীরা। কার্যত সেটাকে ভাল ফল বলার অপেক্ষা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই বললেই ভাল হয়। কেননা কলকাতায় যে জোড়াফুলের ঝড় বয়ে যাবে সেটা আগে থেকেই অনুমান ছিল। সেটাই হতে দেখা যাচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিরোধীরা কতটা জমি ধরে রাখতে পারে সেটা দেখার দিকেই সকলে তাকিয়ে ছিলেন। দেখা যাচ্ছে বিজেপি এবার বাম ও কংগ্রেস অপেক্ষা বিরোধী পরিসর দখলের পথে এগিয়ে থাকছে। তবে এখানেও থাকছে সন্দেহ। কেননা গতবারের জেতা বেশ কিছু আসনে বিজেপি পিছিয়ে পড়েছে এদিন।