নিজস্ব প্রতিনিধি: মার্চ মাস শেষের পথে। তারপরেই পড়ে যাবে এপ্রিল মাস। এই মাসেই থাকে বাঙালির নববর্ষ। আর থাকে বাসন্তী পুজা, অন্নপূর্ণা পুজা। থাকে রামনবমীও। এবার সেই রামনবমী(Ram Nabami) পড়েছে ১৭ এপ্রিল। আর তার ঠিক ২ দিনের মাথায় অর্থাৎ ১৯ এপ্রিল দেশে প্রথম দফার ভোট। প্রথম দফার ভোট বাংলার(Bengal) বুকেও। সেই রামনবমীকে মাথায় রেখে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা VHP এই রাজ্যে রামমহোৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাও এক আধ দিনের জন্য নয়, টানা ৯ দিন ধরে সেই উৎসব পালিত হবে। আগামী ৯ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে সেই মহোৎসব। আর এখানেই কপালে ভাঁজ পড়েছে এ রাজ্যের পুলিশ থেকে প্রশাসকদের। কেননা গত কয়েক বছরে এই রামনবমীকে কেন্দ্র করে বাংলার বুকে বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের বুকে একাধিক জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এবার ভোটের আবহের সেই একই পরিস্থিতি তৈরি হলে তা যে গেরুয়া ব্রিগেডের পক্ষে হাওয়া তোলার পক্ষে যথেষ্ট সেটা কে না আর জানে।
লোকসভা ভোটের(Loksabha Election 2024) মুখে রামনবমী তিথিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি চাইছে পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রকে নিয়ে জনমানসে ভাবাবেগ ফেরাতে। সেই সূত্রেই বাংলার বুকে ৯দিনের কর্মসূচী নিয়েছে VHP। সেই সব কর্মসূচীর মধ্যে থাকছে, বাংলার বুকে ৫ হাজার জায়গায় শোভাযাত্রা বার করা, আলোচনা সভা, পুজাপাঠসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান। হিন্দুসমাজের কাছে রামচন্দ্রের আদর্শ ছড়িয়ে দিতে বাংলায় রামমহোৎসব পালিত হবে। ভারতীয়ত্বের অস্মিতা অটুট রাখার লক্ষ্যে রাজ্যের ব্লক পর্যায়ে পালিত হবে রামনবমী। অন্তত এমনটাই দাবি, VHP কর্তাদের। বাংলায় রামমহোৎসব বা হিন্দুসমাজের কাছে রামচন্দ্রের আদর্শ ছড়িয়ে এবং ভারতীয়ত্বের অস্মিতা অটুট রাখা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই কারও। যাবতীয় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে বাংলার বুকে ৫ হাজার জায়গায় শোভাযাত্রা(5000 Processions) বার করার সিদ্ধান্ত। কেননা বার বার দেখা গিয়েছে রাম নবমীর শোভাযাত্রা থেকেই যাবতীয় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে।
এবার ভোটের জন্য দেশজুড়ে আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন দুইই চলে গিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারে। তাই এবারে বাংলার বুকে ওই ৫ হাজার মিছিল বার করতে হলে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হবে। সেই অনুমতি কমিশন দেবে কী দেবে না সেটা তাঁদের বিষয়। তবে বাংলার পুলিশ ও প্রশাসন এখন থেকেই এই মিছিলের বিষয়টি নিয়ে সতর্কিত। তাঁদের আশঙ্কা, হাওড়া-হুগলি শিল্পাঞ্চল, দুর্গাপুর-আসানসোল শিল্পাঞ্চল, খড়গপুর-মেদিনীপুর শিল্পাঞ্চল, ব্যরাকপুর শিল্পাঞ্চল এলাকা ছাড়াও বসিরহাট, বেলডাঙা, সিউড়ি, কলকাতার মতো এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে। তাই প্রাথমিক ভাবে মিছিলে সায় না দেওয়ার পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে দেখা হবে পুরাতন রীতি মেনে কোন কোন এলাকায় মিছিল বার করার অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। সেই সব মিছিলে অনুমতি থাকবে বা দেওয়া হবে। কিন্তু নতুন কেউ মিছিল বার করতে চাইলে তা দেওয়া হবে না।