নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বজুড়ে পুরুষদের রাতের ঘুম ছোটার পক্ষে এই খবরটি যথেষ্ট। এই ঘটনার জেরে এখন ইউরোপের বেশ কিছু পুরুষের শুধু যে রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে তাই নয়, অনেকেরই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে, মনের শান্তিও চলে গিয়েছে। অনেকের আবার বিয়ে, ঘর-সংসার, সম্পর্কও ভাঙতে বসেছে। কারন এদের একটা বড় অংশই আক্রান্ত হয়েছিলেন কোভিডে। প্রাণে বেঁচে সেরে উঠে তাঁরা দেখছেন তাঁদের অহংকারের প্রতীক তাঁদের পুরুষাঙ্গ আর আগের মতো নেই। আকারে তা অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে শরীর মন সঙ্গমের জন্য উত্তেজিত হলেও তার কোনও প্রতিফলন ঘটছে না তাঁদের পুরুষাঙ্গে। সঙ্গমের জন্য পুরুষাঙ্গে যে দৃঢ়তার প্রয়োজন হয় সেই দৃঢ়তাই কার্যত হারিয়ে গিয়েছে। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কার্যত দলে দলে চিকিৎসকদের কাছে যাওয়া শুরু করেছেন ঠিক কী হয়েছে তা জানার জন্য ও সমস্যার সমাধানের জন্য। কিন্তু সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে এরা আক্রান্ত হয়েছেন ইরেকটাইল ডিসফাংশানে।
সম্প্রতি লন্ডনের এক বাসিন্দা পডকাস্ট চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করে তাঁর সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তাতে তিনি জানান, কোভিড থেকে সেরে উঠে তিনি দেখছেন তাঁর যৌন ক্ষমতা কার্যত চলে গিয়েছে। সঙ্গমের জন্য মন আর শরীর উদগ্রীব হয়ে উঠলেও পুরুষাঙ্গ আর আগের মতো দৃঢ় হচ্ছে না। এমনকি তিনি স্কেল দিয়ে মেপে দেখেছেন যে তাঁর পুরুষাঙ্গ ১.৫ ইঞ্চি ছোট হয়ে গিয়েছে। এরপরেই তিনি বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে জানিয়ে দিয়েছে তিনি ইরেকটাইল ডিসফাংশানে আক্রান্ত হয়েছেন আর তা সারানো যাবে না। এই ঘটনা সামনে আসার পরেই রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে রানীর দেশে। কিন্তু সময়ের জল যত দ্রুত গড়াচ্ছে দেখা যাচ্ছে শুধু এই ব্যক্তিই নয়, ইংল্যান্ড ও ইউরোপের কোভিডে আক্রান্ত বহু পুরুষের মধ্যেই এই রোগ বাসা বেঁধেছে।
এরপরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাঠে নামে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ। একই বিষয়ে সমীক্ষা শুরু করে মার্কিন মুলুকের মিয়ামি মুলুক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ মেডিসিনও। এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ৬০০০ কোভিড আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে সমীক্ষা চালায়। দেখা যায় এরা কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরে ইরেকটাইল ডিসফাংশানে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সবাই নন, ৬০০০ জনের মধ্যে ৪৮০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সমীক্ষা ও চিকিৎসার রিপোর্ট বলছে কোভিডের জেরে এই সব ব্যক্তিদের রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফলে পুরুষাঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত সরবরাহ হচ্ছে না। তাই যেমন তা শুকিয়ে গিয়ে ছোট হয়ে যাচ্ছে তেমনি সঙ্গমের জন্য দৃঢ় হচ্ছে না। এই সমস্যায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের সমস্যা যে কোনও দিনই সমাধান হবে না সেকথা কিন্তু বলছেন না চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, এই রোগ যে কখনও সারবে না, তেমন ধরে নেওয়ার কারণ নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা কেটে যেতেও পারে। তবে এর যে কোনও ওষুধ এখনও নেই।
