নিজস্ব প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ: সরকারি কোনও সুবিধা জোটেনি ভাগ্যে। তাই ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করেই জীবন নির্বাহ করছেন। সরকারি বঞ্চনার প্রতিবাদে তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বইলরের বাসিন্দা আবুল মুনসুর ফকির। নির্বাচন কমিশন এখনও ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণা করেনি। কিন্তু সেই ভোট নির্ঘন্টের জন্য অপেক্ষা করে বসে নেই মুনসুর। মানুষের দরজায়-দরজায় দু’হাত পেতে সাহায্য ভিক্ষার পাশাপাশি ভোট ভিক্ষাও চালাচ্ছেন।
দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেই বেড়ে ওঠা বইলর ইউনিয়নের বড়পুকুরপাড় গ্রামের বাসিন্দা আবুল মুনসুরের।আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য ছোট বয়সেই দিনমজুরের কাজে নামতে হয় তাকে।বিয়ের পর অন্যের রিকশা ভাড়ায় চালিয়ে সংসারের জোয়াল টানছিলেন। কিন্তু ফের ভাগ্যের হাতে মার খেয়েছিলেন। কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে কায়িক পরিশ্রমের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। তার পরেই ভিক্ষাকে বেছে নিয়েছিলেন পেশা হিসেবে। গত ১৪ বছর ধরে ভিক্ষা করেই চলছে তার সংসার। সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা জোটেনি ভাগ্যে।
প্রশাসনের উদাসীনতা আর বঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন জেগেছিল মুনসুরের মনে। গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। অনেকে ব্যঙ্গ করেছিলেন। আবার অনেকে সমর্থনও জানিয়েছিলেন। নির্বাঢনী ফলাফল দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা চমকে গিয়েছিলেন। পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চশমা প্রতীক নিয়ে ৩৭৭ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছিলেন। আর তাতেই এক লহমায় অনেকটা আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ষাটোর্ধ্ব মুনসুরের। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত ১০-১২ দিন ধরেই এক হাতে পোস্টারের ব্যাগ, অন্য হাতে আঠার বালতি নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানো পোস্টার সাঁটিয়ে চলছেন দেওয়ালে-দেওয়ালে। আর ষাটোর্ধ্ব মানুষটিকে উৎসাহ জোগাচ্ছেন অনেকেই।