নিজস্ব প্রতিনিধিঃ এক দুই করে বাড়তে বাড়তে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পদার্পণ করল ২১ তম দিনে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের নামে যে আগ্রাসন শুরু করেছে রাশিয়া তার জেরে ইতিমধ্যেই অর্ধেকেরও বেশী ইউক্রেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাস্তুহারা হয়েছে কয়েক লক্ষ্য মানুষ। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে চিন। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট জানা গিয়েছে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা চালানোর পর থেকেই চিনে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ইউক্রেনীয় মেয়েদের চাহিদা। চিনের একাধিক বিবাহযোগ্য ব্যক্তিই নাকি ইউক্রেনীয় মহিলা খুঁজে চলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে চিনের একাধিক ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট সব জায়গাতেই এই ২১ দিনেই কার্যত তুঙ্গে পৌঁছেছে ইউক্রেনীয় মেয়েদের চাহিদা।
জাতি সংঘের রিপোর্ট জানাচ্ছে সাম্প্রতিক রুশ সংঘাতে ইতিমধ্যেই বাস্তুহারা হয়েছেন প্রায় ২১ লক্ষ মানুষ। তাঁদের সিংহভাগই এই মুহূর্তে উদ্বাস্তু হয়ে কোনও না কোনও প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত রাত কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে চিনে এই মুহূর্তে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে লিঙ্গ বৈষম্যের সমস্যা। এই দেশের অধিকাংশ বিবাহযোগ্য পুরুষই বিয়ে করার জন্য মেয়ে পাচ্ছেন না। বিগত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে মেয়েদের জন্মের হার। আর তাই এই সমস্যা দুএর করতে এই মুহূর্তে নিরাশ্রয় ইউক্রেনীয় মহিলাদের দিকে ঝুঁকেছেন চিনের পুরুষরা।
উল্লেখ্য, চিনে গত ১৫ বছর ধরে লাগু এক সন্তান আইন। দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও পরিবারের একের বেশী সন্তান থাকলেই নাগরিকত্ব হারাতে হয়। এর জেরে অধিকাংশ পরিবারই তাঁদের একমাত্র সন্তান হিসাবে পুত্রসন্তানই চাইছেন। তারই প্রভাব পড়েছে লিঙ্গ বৈষম্যের ওপর। চিনে মেয়েদের সংখ্যা বিগত কয়েক বছরে এতটা কমে গিয়েছে যে বিবাহযোগ্য পাত্রী কার্যত দুর্লভ একটি জিনিসে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেনে আবার উলট পুরান। এই দেশে বরাবরই ছেলেদের থেকে মেয়েদের সংখ্যা বেশী। ফলে দুইয়ে দুইয়ে চার হয়ে রাতারাতি ইউক্রেনীয় মেয়েদের খোঁজে নেমেছে চিনের ছেলেরা।
ওই রিপোর্ট বলছে এই ২১ দিনের মধ্যে অন্তত ৭৪৮ পুরুষ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে ইউক্রেনীয় মেয়েদের খোঁজ করেছেন। অন্যদিকে ৭০ জন ইউক্রেনীয় মহিলাও চিনা পুরুষদের খোঁজ করেছেন। তবে সবথেকে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল ইতিমধ্যেই ৮ থেকে ৯ জন জুটির বিবাহও সম্পন্ন হয়েছে।