নিসর্গ নির্যাস: আর একদিন পেরোলেই ২৬ জানুয়ারি। ১৯৫০ সাল থেকে সংবিধান কার্যকর হয়। সেদিন থেকেই ভারত পরিচিতি লাভ করে, সাধারণতন্ত্রিক দেশ হিসেবে। প্রতিবছর এই দিনটি সাধারণতন্ত্র দিবস (REPUBLIC DAY) হিসেবে পালিত হয়। এই বছর একই দিনে পড়েছে সরস্বতীপুজোর তিথি। অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে বাগদেবীর আরাধনাই যেন চিনিয়েছিল ‘সাধারণতন্ত্র’।
স্কুলবেলার বয়স। বয়ঃসন্ধির বয়স। তখন সরস্বতী পুজো (SARASWATI PUJA) মানেই ‘প্রেমদিবস’। আর কয়েক বছর আগেও ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র এত রমরমা ছিল না। তখন বাগদেবীর পুজোই বাঙালিকে ‘ছেলেমেয়ে বেলা’তে চিনিয়েছিল প্রেমদিবসের স্বাদ। কিন্তু শুধুই কি প্রেমের দিন? কিংবা শুধুই পুজো? বিশেষ এই দিনে ‘সাধারণতন্ত্র’ কিছু কম ছিল কি?
‘গণতন্ত্র’ বা ‘সাধারণতন্ত্র’ কী? তখনও চেনার বয়স হয়নি। ‘ভক্তি’র চেয়ে ‘অবুঝ’ বয়স অনেক বেশি ঝাঁপিয়েছিল ‘উৎসবে’। কিন্তু প্রতিমা আনা থেকে পুজো থেকে বিসর্জন, পুজো উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে ভুরিভোজের আয়োজন বা আমন্ত্রণের ভার সকলেই পালন করত গুরুত্বপূর্ণ ‘দায়িত্ব’। আবার ‘কর্তব্য’ মানেই স্বেচ্ছাচারিতা নয়। স্কুলবেলা মানে সকলে ‘সমান’। নেই ‘জাতি-ধর্ম-বর্ণ’ ভেদাভেদ। কে এই আয়োজনে অংশ নেবে বা নেবে না, তাতেও ‘স্বাধীনতা’। আবার প্রেমের সম্পর্ক- সে ও তো নিজস্ব মতামত। সেখানে বেড়াজাল নেই কোনও। অন্যদিকের মানুষটার মতামত শুধু প্রয়োজন। ওই বয়সেই ‘বাক স্বাধীনতা’ চেনার শুরু। সেই সঙ্গে চেনার শুরু কী বলা উচিৎ বা অনুচিৎ। এও কি গণতন্ত্রের ‘পাঠবিহীন’ ‘পাঠ’ নয়? স্কুলবেলা পেরানোর বহু বছর পরে অনুধাবন করা যায় আজও। উৎসবের আবহে এবারের ২৬ জানুয়ারি মিলিয়ে দেবে সেই ‘সাধারণতন্ত্র’কেই।