নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ধর্মের বিষবাষ্পে যখন দেশের আকাশ ঢাকছে, তখনই ভিন চিত্র দেখা গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ধর্মের বেড়া ডিঙিয়ে আসন্ন সরস্বতী পুজোর জন্য মূর্তি গড়ায় অন্যান্য পড়ুয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ। বাগ-দেবীর আরাধনায় ধর্ম যে প্রতিবন্ধকতার বেড়া তুলতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মধ্যে, রবিবার জগন্নাথ হলেই গিয়েই তার প্রমাণ মিলল।
করোনার বিধি-নিষেধ থাকায় গত দু”বছর প্রাণ খুলে সরস্বতী পুজো করতে পারেননি দেশের অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পড়ুয়ারা। এ বছর বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ায় কোমর কষে ঝাঁপিয়েছেন। বড় সড় করেই মহাশ্বেতার আরাধনার আয়োজনে নেমে পড়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই জগন্নাথ হলে বড় করে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের পড়ুয়ারা নিজেদের মতো করে বাগদেবীর আরাধনায় ব্রতী হন। জগন্নাথ হলের প্রোক্টর তথা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মিহিরলাল সাহা জানিয়েছেন, চলতি বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৭৩টি মণ্ডপে সরস্বতী পুজো হবে। সবার জন্যই প্রবেশ অবাধ থাকছে।
জগন্নাথ হলের উপাসনালয়েই প্রধান পুজো অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি হলের পুকুরে প্রতি বছরের মতো এবারও চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিন্দু দেবীর প্রতিমা তৈরিতে অন্যান্যদের মতো ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদকেও। এক গাল হেসে বললেন, ‘দুই বছর সরস্বতী পুজোয় প্রাণ খুলে আনন্দ করতে পারিনি। এ বছর ফের বড় আকারে পুজো করার অনুমতি পেয়েছি। কে কোন ধর্মের তা আমাদের কাছে বড় নয। আমাদের একটাই ধর্ম, তা হল আমরা শিক্ষার্থী। আর তাই শিক্ষার দেবীর আরাধনায় সবাই হাত লাগিয়েছি।’