আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপের মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে ঋতুমতী মহিলা কর্মীদের সবেতন ছুটি সংক্রান্ত আইন পাশ হয়ে গেল স্পেনের সংসদে। বৃহস্পতিবার স্পেনের সংসদে ওই এ সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করেছেন সাংসদরা। ঋতুস্রাব চলাকালীন মহিলা কর্মীরা তিনদিনের সবেতন ছুটি পাবেন বলে আইনে বলা হয়েছে। তবে ছুটি পেতে গেলে চিকিৎসকের সনদ অর্থাৎ প্রেসক্রিপশন দেখাতে হবে তাঁদের। ঋতুস্রাব চলাকালীন মহিলা কর্মীদের সবেতন ছুটির পাশাপাশি ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী তরুণীদের অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া গর্ভপাতের অধিকার সংক্রান্ত আইনও পাশ হয়েছে। আর মেয়েদের জন্য এই দুই আইন পাশ হওযার সঙ্গে সঙ্গেই স্পেনের সমতা বিষয়ক মন্ত্রী আইরিন মন্টেরোও টুইটে বলেছেন, ‘নারীবাদী অগ্রগতির জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন।’
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া সহ বিশ্বের একাধিক দেশে মহিলা কর্মীদের জন্য ঋতুকালীন ছুটি চালু রয়েছে। তাছাড়া বহু দেশে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও ঋতুমতীদের ছুটি মঞ্জুর করেছে। কিন্তু ইউরোপের কোনও দেশে মেয়েদের ঋতুস্রাব চলাকালীন সবেতন ছুটি দেওয়ার প্রচলন নেই। গত বছরের মে মাসেই প্রথম পাশ্চাত্য দেশ হিসেবে স্পেন মেয়েদের ঋতুকালীন ছুটি দেওয়ার মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়। স্পেনের মন্ত্রিসভাও ওই সিদ্ধান্তে ছাড়পত্র দিয়েছিল। আইন হিসেবে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজন ছিল সংসদের সিলমোহর। তাও এদিন পাওয়া গিয়েছে। ফলে ইউরোপের প্রথম দেশের নাগরিক হিসেবে ঋতুস্রাবের সময় ছুটির অধিকার ভোগ করবেন স্পেনের নারীরা। পাশাপাশি ১৬-১৭ বছরের তরুণীদের আর গর্ভপাত করানোর জন্য অভিভাবকের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না। এই বিষয় নিয়েও আইন পাশ হয়েছে। ‘দ্য স্প্যানিশ গাইনোকোলজি অ্যান্ড অবস্টেট্রিক্স সোসাইটি’র তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক তৃতীয়াংশ মহিলারা ঋতুস্রাব চলাকালীন বা তার আগে তীব্র পেটের যন্ত্রণায় ভোগেন। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা হয়, ডিসমেনোরিয়া। মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া এমনকি জ্বরের মতো উপসর্গও দেখা যায়।
স্পেনের সংসদে মহিলা কর্মীদের ঋতুকালীন সবেতন ছুটি সংক্রান্ত আইন অনুমোদনের পরেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। নারীবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি নয়া আইনকে স্বাগত জানালেও দেশের অন্যতম বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ইউজিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই আইন চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরুষদের বাড়তি সুবিধা এনে দেবে।