এই মুহূর্তে




৫৪০ বছর আগে দুর্গাপুজোয় সাড়ে আট লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন যে রাজা

courtesy google




নিজস্ব প্রতিনিধি : দুর্গাপুজো মানেই এক ঘাটে জল খায় সকলে। কিবা বাঙাল কিবা ঘটি। দেশ বিদেশেও পরিচিত পেয়েছে প্রাণের দুর্গাপুজো। এপার থেকে ওপারে বিস্তর কিছু ফারাক নেই। হাতে আর বেশি সময় নেই। আর ক’টা দিন পরেই আসছে উমা..। তেমনই প্রত্যেক বছর সেজে ওঠে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর শ্রীশ্রী গোবিন্দ ও দুর্গামাতা মন্দির। শোনা যায়,রাজা কংস নারায়ন আজ থেকে ৫৪০ বছর আগে দুর্গা পুজোর জন্য সাড়ে আট লক্ষ টাকা খরচ করেছিল এই মন্দিরে। 

রাজশাহী জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরের এই তাহেরপুরের আদিনাম ছিল ‘তাহিরপুর’। আজ থেকে ৫৪০ বছর আগে এখান থেকেই সর্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরু বলে মনে করা হয়।শোনা যায়,এই আমলে রাজা কংস নারায়ণ রায় সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে রাজবাড়িতে ওই আয়োজন করেছিলেন। শুনলে অবাক হবেন যে এখনকার আমলে ওই টাকার পরিমাণ ৩০০ কোটিরও বেশি।

কোথাও দুর্গোৎসবের আয়োজনে কোনো মণ্ডপে এত টাকা খরচ আর হয়েছে বলে জানা যায়নি। সম্রাট আকবরের আমলে বাংলার ‘বারো ভূঁইয়া’-এর এক ভূঁইয়া রাজা কংসনারায়ণ রায় দুর্গা পুজোর জন্য ব্যয় করেছিলেন এই অর্থ। যদিও এর আগে অনেকই মাতৃশক্তির আরাধনা করেছিলেন। কিন্তু কেউ এত টাকা ব্যয় করেন নি।

ইতিহাস : বলা হয়,তাহিরপুরের রাজবংশ ছিল বাংলার প্রাচীন রাজবংশ গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই রাজবংশের আদিপুরুষ হল মৌন ভট্ট। বংশের শ্রেষ্ঠ সামন্ত ছিলেন কংসনারায়ণ রায়। মোগল-পূর্ব সময়ে চট্টগ্রামের মগ দমন, ফৌজদারের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। রাজা টোডরমলের সঙ্গে ভূমি বন্দোবস্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন কংসনারায়ণ। 

আরও পড়ুন : মুসলিম ভোগে শুরু পুজো ! নেই আরতি ও পুষ্পাঞ্জলি ! জানেন কী ‘কোদাখাকি দুর্গার’ অজানা কাহিনী

কিন্তু তিনি ভেবেছিলেন, সম্রাট তাঁকে বাংলার সুবেদার করবেন। কিন্তু সম্রাট তাঁকে ‘রাজা’ উপাধিতে ভূষিত করে বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করেন। এরপর তিনি রেগে যান। অভিমানে বয়স বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে এই দায়িত্ব ফিরিয়ে দেন।

কংসনারায়ণ এমন কিছু করতে চাইছিলেন,যাতে সকলে তাঁকে মনে রাখে। বিশেষ করে হিন্দু সমাজ তাঁকে সারাজীবন মনে থাকবে। কিন্তু ভেবে পাচ্ছিলেন না কি করবেন। একদিন তিনি সমস্ত পন্ডিতদের রাজসভায় ডাকলেন। তিনি জানালেন, অশ্বমেধ যজ্ঞ করতে চান। পন্ডিতেরা রাজার নাকচ করে দিয়েছিল। কেননা তাঁরা যুক্তি দেখিয়েছিল, কলিযুগে অশ্বমেধ যজ্ঞের বিধান শাস্ত্রে নেই। এটা শুনেই রাজার মন আরও খারাপ হল। ঠিক তখনই পণ্ডিত রমেশ শাস্ত্রী পরামর্শ দিলেন দুর্গাপুজো করার।

এতে সমস্ত মহাযজ্ঞের সমান ফল পাওয়া যায়। কেননা এর কোন বিধিনিষেধ ছিল না। যে কোনো যুগে যে কেউ করতে পারে এই পুজো। এই পরামর্শ ভারী পছন্দ হয়েছিল রাজার। তাই তিনি আদেশ দিয়েছিলেন, এই শর্তেই যেন আয়োজন হয় এই উৎসবের। যেমন আদেশ তেমন কাজ।

আরও পড়ুন :  কেন দশভুজার সঙ্গে থাকে গণেশ-সরস্বতীরা ? জেনে নিন দুর্গা পরিবারের রহস্য!

এরপরই মহাসমারোহে পালিত হল দুর্গোৎসব। ষোলো শতকের সে উৎসবে ব্যয় হয় তা প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ, মতান্তরে ৯ লক্ষ টাকা। এই উৎসব হয়েছিল রামরামা গ্রামের দুর্গামন্দিরে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাল এই উৎসবে।

উল্লেখ্য, তবে মন্দিরটিতে আগে মাটির প্রতিমায় পুজো হলেও এখন আর মাটির প্রতিমায় দুর্গাপূজা হয় না। প্রতিমা বিসর্জনও করা হয় না। ২০১৮ সালে স্থানীয় এক সাংসদ প্রায় ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অষ্টধাতুর প্রতিমা বানিয়ে দিয়েছেন। সেটাই রয়ে গিয়েছে। এই মন্দিরে এখন রাজা নেই। নেই রাজাদের বংশধরেরাও। শুধু পড়ে আছে ঐতিহ্য। আজও বহু মানুষ এই মন্দিরে এসে ভিড় জমায়।

আরও পড়ুন : কনকাঞ্জলি দেন পুরুষরা! স্বপ্নাদেশে শুরু পালবাড়ির পুজো




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

নর্তকীকে ফ্ল্যাটে বন্দি রেখে লাগাতার ধর্ষণ, তাজমহলের শহর আগ্রার ঘটনায় শোরগোল

ফরিদপুরে একই মণ্ডপে ২৫১ দুর্গা প্রতিমা দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়

পর পর ২ বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ‘অপরাধে’ চাকরি গেল কলেজ শিক্ষিকার

পুজো শেষে দুপুরে জমিয়ে খান ওল-চিংড়ি: সহজ রেসিপিতে রসনা তৃপ্তি করুন ঘরেই

সাড়া ফেলতে পারল না পদ্মার ইলিশ, অনুমোদনের মাত্র ২০ শতাংশ ইলিশ এসেছে

‘জেলেই মারা যাব’, নিজের মৃত্যুর সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন পুতিনের ‘দুশমন’ নাভালনি

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর