নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শেষবার যখন কথা হয়েছিল তখন শুনেছিলেন রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যেকার যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। যে কোনও মুহূর্তে ইউক্রেনের মাটিতে জোরালো আঘাত হানতে পারে রুশ বাহিনী। এরপর মাঝে কেটে গিয়েছে কয়েক সপ্তাহ। রাশিয়ার মাটিতে একটি ছোট রিসার্চ ক্যাপসুলের মধ্যে কার্যত বন্দী অবস্থায় দিনরাত ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন নাসার কয়েকজন বিজ্ঞানী। ৬ জনের ওই বিশেষ বিজ্ঞানী দলের মধ্যে যেমন রয়েছেন দুজন আমেরিকার নাগরিক, ঠিক তেমনই আবার ওই দলের ৩ জন সদস্য রুশ। যুদ্ধের মাটিতে আমেরিকা, রাশিয়া একে ওপরের প্রতিপক্ষ, কিন্তু নাসার এই বিশেষ বিজ্ঞানী দলের সমস্ত সদস্যরাই অদূর ভবিষ্যতকে আরও সুন্দর এবং আরও আধুনিক করে তুলতে দিন রাত এক করে চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষণা। এমনকি ক্যাপসুলের বাইরে যে ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি সেই সম্পর্কেও তাঁরা কিছুই জানেন না, এমনটাই আশঙ্কা করছেন নাসার অন্যান্য গবেষকরা।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি নাসা ওই ক্যাপসুলের মধ্যে থাকা ৬ জন মহাকাশচারীর অপর একটি গবেষণা চালাচ্ছেন। এই গবেষণার নাম সিরিয়াস ২১। ওই ক্যাপসুলের মধ্যে আটকে থাকা ওই ৬ জনের গতিবিধির অপর নজর রাখাই হল এই গবেষণার মূল বিষয়বস্তু। আর তাই তাঁদের বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ওই ক্যাপসুলের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। এই দলের মধ্যে রয়েছেন দুজন মার্কিন বিজ্ঞানী উইলিয়াম ব্রাউন ও অ্যাশলে কোয়ালস্কি। এছাড়াও এই দলে ৩ জন রুশ বিজ্ঞানীও রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। ক্যাপসুলটি এই মুহূর্তে অবস্থিত রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি গবেষণাগারে। অর্থাৎ যুদ্ধের যে পরিস্থিতিতে রাশিয়া এবং আমেরিকা একে অপরকে এক ইঞ্চিও জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ ঠিক তখনই ওই ক্যাপসুলে মার্কিন এবং রুশ নাগরিকরা এক সঙ্গেই বসবাস করছেন। নাসার ওই মিশনের অংশ হিসাবে, এই বিজ্ঞানীরা নভেম্বরে ক্যাপসুলে গিয়েছিলেন এবং আগামী জুলাই পর্যন্ত সেখানেই বন্ধ থাকবেন। বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগের জন্য তাঁদের একটাই উপায় আছে। একটি ইলেক্ট্রনিক চিঠির মাধ্যমে তাঁরা বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর সেই বৈদ্যুতিন চিঠিগুলি পরীক্ষার সাথে জড়িত একজন সমন্বয়কারী দ্বারা একটি নিরাপদ সার্ভারে আপলোড করা হয়। পুরো বিষয়টিই একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর তাই একটি নির্দিষ্ট সময় পরেই পুনরায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।
জানা যাচ্ছে, শেষবার যখন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল তখন তাঁদের ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরে যুদ্ধ যে লেগে গিয়েছে এবং সমগ্র বিশ্বজুড়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটা আর তাঁদের জানানো হয়নি। ফলে এই বিষয়ে তাঁরা এখনও অজানা বলেই মনে করছেন তাঁদের নাসার সঙ্গী সাথীরা।