নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল: কথায় বলে, রাখে আল্লা, মারে কে?
শনিবার বিকালে ফের একবার হাতেনাতেই তার প্রমাণ মিলল। শৌচাগারে গিয়েই কমোডের মধ্যে সন্তান প্রসব করে দিয়েছিলেন এক প্রসূতি। নবজাতক আটকে গিয়েছিল কমোডের ভিতরে। শেষ পর্যন্ত কমোডের পাইপ ভেঙেই উদ্ধার করা হল নবজাতককে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের ঘটনা, ভাগ্যের জোরে রক্ষা পেয়েছে সদ্য পৃথিবীর আলো দেখা এক রত্তি শিশু। আপাতত ভর্তি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষ সেবা ইউনিটে (স্ক্যানু)। সন্তানের অত্যাশ্চর্যভাবে বেঁচে যাওয়ার জন্য সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাবা-মা দুজনেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে শনিবার সকালেই বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির বাসিন্দা শিল্পী বেগম। চিকিৎসকরা রোগীকে পরীক্ষা করে অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন। অস্ত্রোপচারের আগে শৌচালয়ে যান শিল্পী বেগম। সেখানেই তার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। কমোডের মধ্যেই সন্তান প্রসব হয়ে যায় তার। এমন আকস্মিক ঘটনায় বিচলিত হয়ে বাইরে এসে আত্মীয়স্বজন ও নার্সকে পুরো ঘটনার কথা জানান। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন সবাই। শেষ পর্যন্ত দমকলকে খবর দেওয়া হয়।
ঘটনার সময়ে ওষুধ কিনতে বাইরে ছিলেন শিল্পীর স্বামী নেয়ামতউল্লাহ। হাসপাতালে পৌঁছেই ঘটনা জানতে পেরে কমোডের কাছে ছুটে যান তিনি। ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ শুনতে পারলেও কোথাও নবজাতককে দেখতে পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত তিনি কমোডের পাইপ ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে আনেন। শরীরে প্রাণ থাকায় সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালের বিশেষ ইউনিটে ভর্তি করা হয় সদ্যোজাতকে।
রবিবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন নেয়ামতউল্লাহ। কোনও রকমে উচ্ছাস চেপে রেখে তিনি বলেন, ‘সর্বশক্তিমানকে অশেষ ধন্যবাদ। তিনিই রক্ষা করেছেন আমার মেয়েকে। না হলে কমোডের পাইপে বেশ খানিকক্ষণ আটকে থাকার পরেও কীভাবে বেঁচে রইল এক রত্তি শিশু?’
আরও পড়ুন শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার মার্কিন নাগরিকের লাশ, গ্রেফতার স্ত্রীর প্রেমিক