নিজস্ব প্রতিনিধি: কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, ঝালদা থেকে বনগাঁ, ডুয়ার্স থেকে সাগর, দেড় মাস ধরে রাস্তায় নেমে বাংলাকে জুড়েছেন তিনি। লাখো জনতাকে নিজের চলার পথে সঙ্গী করে তুলেছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা আবাল বৃদ্ধবণিতা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থেকেছেন তাঁকে একবার দেখার জন্য, একটু ছোঁয়ার জন্য, একটু কথা বলার জন্য, তাঁর সঙ্গে একটা সেলফি তোলার জন্য। কেননা তিনি যে বাংলার অগ্নিকন্যারই যোগ্য উত্তরসুরি। রাজপথে আন্দোলন করে বাংলার রাজনীতিতে বিরোধী দলনেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে উত্তরণ ঘটেছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee), সেই জননেত্রীর ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদককে কে না দেখেতে চাইবে, ছুঁতে চাইবে? তাই সেই নবজোয়ার যাত্রায় সঙ্গী হয়েছিলেন বাংলার কোটি কোটি মানুষ। আর সেই যাত্রাকালেই চূড়ান্ত দুর্ব্যবহার করেছিলেন বাংলা থেকেই নির্বাচিত এক বিজেপি(BJP) সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। মানুষ তাঁকে পঞ্চায়েত ভোটে যোগ্য জবাব দিয়েছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের(TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবসে তাঁকে পাল্টা জবাব দিলেন অগ্নিকন্যার উত্তরসুরি অভিষেক বন্ধ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। আর সেটা নাম করেই।
অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রাকালে তিনি যখন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছিলেন, সেই সময় তাঁকে মূল মন্দিরে ঢুকতে দেননি ঠাকুরবাড়ির বড় ছেলে তথা বিজেপির সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর(Shantanu Thakur)। নিজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে ভেতরে ঢুকে মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাঁর সেই আচরণের তীব্র নিন্দা নেমে এসেছিল সারা বাংলাজুড়েই। নিন্দা করেছিল সর্বভারতীয় মতুয়া সঙ্ঘ এবং মতুয়া ধর্মগুরুরাও। তার ফলটাও পরে শান্তনু হাতেনাতে পেয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বনগাঁ মহকুমার কোনও জেলা পরিষদের আসনে যেমন বিজেপি জেতেনি, তেমনি সেখানকার কোনও পঞ্চায়েত সমিতিতেও তাঁরা জয়ী হয়নি। মহকুমার বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। শুধু তাই নয়, শান্তনু ঠাকুর আর তাঁর বিধায়ক ভাই সুব্রত ঠাকুর যে দুই বুথের ভোটার, সেই দুই বুথেও হেরেছে বিজেপি। এদিন সেই ঘটনা তুলে ধরে তাঁদের আক্রমণের নিশানা বানিয়েছেন অভিষেক।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মঞ্চে থেকে এদিন অভিষেক বলেন, ‘যারা বলেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢুকতে দেব না, তারা নিজেদের বুথে ভোটে হেরেছে। তাঁরা আজ কোথায় গেলেন? বিজেপি নেতা, সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর আমায় ঠাকুরবাড়িতে ঢুকতে দেননি। বলেছিলেন যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লাগবে। মানুষ তাঁকে জবাব দিয়ে দিয়েছে। নিজেদের বুথেই হেরেছে। শুধু তিনিই নন, চমকানো নেতা দিলীপ ঘোষ নিজে বুথ হেরে গিয়েছেন। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যে গ্রামটি দত্তক নিয়েছেন, সেই গ্রামে হেরেছেন। আর পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তো পুরসভা ভোটে নিজের বুথে হেরেছেন। আগামী দিনে ওদের জামানত বাজেয়াপ্ত করতে হবে। অভিষেক কে ঢুকতে দেবে না! বনগাঁয় আমাকে ঢুকতে দেয়নি। শান্তনু ঠাকুর আমাকে মন্দিরে ঢুকতে দেননি। নিজের বুথে হেরেছে। যাঁরা নিজের বুথে জিততে পারবে না, তাঁরা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাবে। আমাকে ধমক-চমক দিয়ে লাভ হবে না।’