এই মুহূর্তে




আগরপাড়ায় NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী প্রৌঢ়ের বাড়িতে অভিষেক

নিজস্ব প্রতিনিধি: আগরপাড়ায় NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী প্রৌঢ় প্রদীপ করের বাড়িতে গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তাঁর সঙ্গী হন সাংসদ পার্থ ভৌমিক এবং পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ। মঙ্গলবার রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।বাড়ি থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ৫৭ বছর বয়সী প্রৌঢ়র। সুইসাইড নোটে আত্মহত্যার কারণ হিসাবে দায়ী করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিক আইন NRC-কে। মৃতদেহের পাশে পড়ে ছিল একটি ডায়েরি। সেই ডাইরিতে লেখা ছিল NRC সম্পর্কিত বিষয়। জানা গিয়েছে। ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে প্রদীপ করের নাম থাকলেও অন্য চার ভাই বোন NRC- এর আওতায় ছিল। এই ভয়ই কুরে কুরে খাচ্ছিল প্রৌঢ়কে। তাই শেষ পর্যন্ত, আত্মহননের পথই বেছে নেনে তিনি।

ডায়েরির খাতার একদম নিচে লেখা আছে “NRC আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী।” প্রদীপ করের হাতের চারটে আঙুল অর্ধেক কাটা ছিল। ঠিকমতো লিখতে পারতেন না বলে দাবি পরিবারের। ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। এদিকে প্রৌঢ়ের মৃত্যুর পর জানা গিয়েছে তিনি ২০০২ সালের ২১৪ নম্বর বুথের ভোটার ছিলেন। প্রদীপ করের চার বোন NRC’র আওতায় রয়েছে। ফলে সবসময় ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতেন তিনি।

প্রদীপ করের সুইসাইড নোটের কারণ প্রকশ্যে আসার পর থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছে শাসকদল। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে নিশানা করে লিখেছেন দিল্লিতে বসে ভারতীয়দের বিদেশি আখ্যা দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনারা নিজেদের হিন্দুদের রক্ষাকর্তা বলে দাবী করেন। আজ খড়দহে প্রদীপ কর নামে এক ৫৭ বছর বয়সী ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। কটা বিজেপির নেতা খোঁজ নিয়েছে, প্রথম তাঁর বাড়িতে সাহায্যের জন্য গিয়েছিল তৃণমূলের লোকেরা। SIR ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রিজেন্ট পার্ক আর খড়দহ মিলিয়ে দু’জন মানুষ মারা গেলেন। আমি জানতে পেরেছি SIR ঘোষণা হওয়ার পর তিনি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সুইসাইড নোটে দায়ী করে গিয়েছিলেন NRCকে। আর কত রক্ত চান জ্ঞানেশকুমার? আর কত রক্ত পেলে খুশি হবেন অমিত শাহ। এত ঔধ্যত্য, এত অহংকার ওদের! খেলা আপনারা শুরু করলেন, শেষ আমরা করব।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তোপ দেগেছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি লিখেছিলেন, “”বছরের পর বছর ধরে বিজেপি কীভাবে এনআরসির হুমকি দিয়ে নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে, মিথ্যা রটনা, আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে তার প্রমাণ এই ঘটনা। ওরা সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে একটি কঠোর আইনের-শাসনে পরিণত করেছে। মানুষকে নিজের অস্তিত্বের অধিকার নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতে বাধ্য করছে। এই মর্মান্তিক মৃত্যু বিজেপির বিষাক্ত প্রচারণার প্রত্যক্ষ পরিণতি। যারা দিল্লিতে বসে জাতীয়তাবাদের প্রচার করে তারা সাধারণ ভারতীয়দের এমন হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে সেই সব সাধারণ মানুষ নিজের দেশেই মারা যাচ্ছে, এই ভয়ে যে তাদের ‘বিদেশী’ ঘোষণা করা হবে।”

তারপরেই তাঁর আশ্বাস, ” “আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই নির্মম খেলা চিরতরে বন্ধ করার দাবী জানাচ্ছি। বাংলা কখনওই এনআরসির অনুমতি দেবে না, কাউকে আমাদের জনগণের মর্যাদা বা স্বত্ব কেড়ে নিতে দেবে না। আমাদের মাটি মা-মাটি-মানুষের, যারা ঘৃণাকেই অস্ত্র বানায় তাদের নয়। দিল্লির জমিদাররা এই কথাটি স্পষ্টভাবে শুনে নিন- বাংলা প্রতিরোধ করবে, বাংলা রক্ষা করবে এবং বাংলা জয়ী হবে।”

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ঐতিহাসিক মুদ্রা থেকে দেশ বিদেশের ডাকটিকিট, মাইক্রোবায়োলজিস্টের সংগ্রহ দেখলে চমকে যাবেন

চেন্নাইয়ে কাজে গিয়ে মৃত্যু, পরিযায়ী শ্রমিক অসীমের দেহ ফিরল বাহারি গ্রামে, শোকের ছায়া বীরভূমে

হায় রে স্বার্থ! SIR শুরু হতেই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বাবা মায়ের খোঁজ নেওয়ার হিড়িক সন্তানদের

CPIM-র ৬ কর্মীকে অপহরণ ও খুনে ৪৫জনকে যাবজ্জীবন

নিকট আত্মীয়কে বাবা সাজিয়ে ভারতীয় পরিচয়পত্র, কমিশনে অভিযুক্তের শ্বশুর

আইনজীবীর চেম্বারে আইন পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ, পলাতক অভিযুক্ত

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ