নিজস্ব প্রতিনিধি: কিছুদিন আগেই রাজ্যের প্রথম সারির এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকার দেওয়ার সময় বেশ কিছু বিস্ফোরক বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই, দলের অন্দরেও কম জলঘোলা হয়নি। কেননা সেই সাক্ষাৎকারে কুণাল দলেরই বয়স্ক নেতাদের আক্রমণ শানিয়েছিলেন। এদিন অর্থাৎ সোমবার কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার বিমান ধরান জন্য দমদম বিমানবন্দরে আসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের সামনেই এই নিয়ে মুখ খোলেন। দলের বয়স্ক নেতাদের আক্রমণ শানিয়ে কুণাল ঠিক করেছেন না ভুল করেছেন সরাসরি সেই প্রসঙ্গে না গেলেও এদিন অভিষেক দলের বয়স্ক নেতাদের উদ্দেশ্যে বড় বার্তা দিয়েছেন।
কুনাল কী বলেছিলেন? কুণাল তাঁর সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘সরকার একের পর এক ভুল করলেও প্রবীণরা কিছুই করছেন না। তাঁদের ভুলেই দলকে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বারংবার। কেন দল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফল করেছিল এবং ২০২১ সালে কেন জয় এল, তার থেকেই দলকে শিক্ষা নিতে হবে। ভোটে আমরা জিতব। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সারা বছর বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক বিষয় (নন ইস্যু) নিয়ে দলকে ব্যতিব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। সিপিএমের মতো হয়ে গেলে চলবে না। দেহত্যাগ না করা পর্যন্ত পদত্যাগ করব না— এমন মানসিকতা ঠিক নয়। দলে নিজেদের ভূমিকা বদলের ব্যপারে কবে কখন কোথায় থামতে হবে সেটা প্রবীণদেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’ এদিন সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুলেছেন অভিষেক।
কী বলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক? তিনি জানিয়েছেন, ‘তৃণমূলের ভিতরে যে কেউ ব্যক্তিগত মতামত দিতে চান দিতে পারেন। শুধু দল বলে নয়, যে কোনও জায়গায় আমি মনে করি উর্ধ্বসীমা থাকা দরকার। যে পরিশ্রম একজন পঞ্চাশ বছরের মানুষ বা চল্লিশ বছরের মানুষ করতে পারেন সেটা কোনও দিন আমার বয়স বেড়ে গেলে করতে পারব না। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কুণাল ঘোষ বলতে পারেন। তবে প্রবীণদেরও অত্যন্ত প্রয়োজন। তাঁদের অভিজ্ঞতা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ উল্লেখ্য গতকালই চোখে পড়েছিল, দেশের ৩টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে হারের মুখ দেখার পরে কংগ্রেসের নীচুতলার কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে একযোগে দলের বয়স্ক নেতাদের নাম না করেই তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেব। তৃণমূলে আজ অবধি সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এমনকি দলের হারের পরেও দলের নীচুতলার কর্মীরা দলের বয়স্ক নেতাদের এভাবে কোনওদিন আক্রমণ শানেননি। কিন্তু এদিন অভিষেকের বার্তাতে এটা স্পষ্ট যে, তিনি চাইচ্ছেন দলের বয়স্ক নেতারাই সময় থাকতে থাকতে ঠিক করে নিন তাঁরা কখন অবসর নেবেন। দলের তরফে তাঁদের ঘাড়ে জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন।