নিজস্ব প্রতিনিধি: নদিয়ার কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের পর এবার, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দেগঙ্গার এমএসকে স্কুল(MSK School)। আবারও স্কুল চলাকালীন সমইয়ে স্কুলের মধ্যেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই শিক্ষক। এবারেও ঘটনার নেপথ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক(Head Teacher) ও এক সহকারী শিক্ষক(Assistant Teacher)। স্কুল চলাকালীন অবস্থায় হেডস্যারের সঙ্গে স্কুলেরই অঙ্কের টিচারের এই মারামারির ঘটনা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। তাঁরা রীতিমত ভয় পেয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। প্রধানশিক্ষকের মারে সহকারী শিক্ষকের নাক ফেটে গলগল করে রক্ত বার হতে শুরু করলে তাঁকে প্রথমে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে সেখান থেকে বারাসতে সরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ওই শিক্ষক।
কিছুদিন আগে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে বেতনের স্টেটমেন্টের দাবিতে প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাসের ঘরের সামনে অবস্থানে বসে ছিলেন ভূগোলের শিক্ষক নিমাই মজুমদার। আচমকা সেই সময় ভূগোলের শিক্ষকের ওপর চড়াও হন প্রধান শিক্ষক। তারপরই দুজনের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে যায়। এরপর অন্য শিক্ষকরা এসে দু’জনকে সরিয়ে দেন। সেই ঘটনায় দুইজনকেই শোকজ করে রাজ্য স্কুলশিক্ষা দফতর। কিন্তু সেই ঘটনাই শুক্রবার আবারও ফিরে এল উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার সদর মহকুমার দেগঙ্গা(Deganga) ব্লকের বাজিতপুর উত্তরপাড়া এলাকার এমএসকে স্কুলে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক কার্তিক পাল দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। তিনি প্রধান শিক্ষক জয়দেব ঘোষের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা পেতেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে সেই টাকা তিনি চেয়েছিলেন জয়দেববাবুর কাছ থেকে। আর সেই টাকা চাইতেই যত বিপত্তি। এদিন সেই টাকা চাওয়া নিয়েই দুইজনের মধ্যে বিবাদ বাঁধে। পরে তা হাতাহাতিতে রূপান্তরিত হয়। সেই সময়েই জয়দেববাবু ঘুঁষি মেরে কার্তিকবাবুর নাক ফাটিয়ে দেন।
যন্ত্রণার জেরে কার্তিকবাবু মাটিতে পড়ে গেলেও থামেননি জয়দেববাবু। তিনি রীতিমত কিল, চড়, ঘুঁষি, লাথি চালিয়ে যান কার্তিকবাবুর ওপর। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে দেখে ছাত্রছাত্রীরা স্কুল ছেড়ে ছুটে পালিয়ে যায়। স্থানীয়েরা খবর পেয়ে ছুটে এসে কার্তিকবাবুকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর পর ওই শিক্ষককে বারাসত জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্কুলে আসে পুলিশ। তাঁরা জয়দেববাবুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা জয়দেববাবুর কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।