নিজস্ব প্রতিনিধি: শ্রাবণ মাসে বহু পূণ্যার্থী শিবের মাথায় জল ঢালতে তারকেশ্বরে(Tarakeshwar) ভিড় জমান। তাঁরা মূলত শ্যাওড়াফুলিতে গঙ্গার ঘাট থেকে জল তুলে তারকেশ্বরের মন্দিরে গিয়ে বাবার মাথায় জল ঢালেন। গোটা শ্রাবণ মাস ধরেই তাই মন্দির প্রাঙ্গণে পূণ্যার্থীদের ঢল নামে। মন্দিরের মধ্যে জল ঢাললে সেই জল গিয়ে জমা হয় মন্দিরের পাশের একটি পুকুরে, যার নাম দুধপুকুর(Dudh Pukur)। ওই দুধপুকুরেই আবার স্নান করেন মন্দিরে আসা অনেক পূণ্যার্থী। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে পার্শ্ববর্তী এলাকার অপরিষ্কার জল সেখানে মিশে যায় নানা সময়ে নানা ভাবে। তার জেরেই দূষিত হয়ে যায় দুধপুকুরের জল। এই বিষয়টি নিয়ে বাম আমলে একবার রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল। বিরোধী থেকে শুরু করে পরিবেশবিদরা সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছিল। এমনকি তা নিয়ে আবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়। কার্যত সেই সময়ে আদালতের হস্তক্ষেপে দুধপুকুরে সাবান মাখা, কাপড়কাচা বন্ধ হয়ে যায়। অপরিস্কার জল দুধপুকুরে মিশলে পাম্পের সাহায্যে জল পরিষ্কারের ব্যাবস্থা করা হয়। ঠিকঠাক নজরদারির অভাবে সেই ব্যাবস্থা প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার জেরে নতুন করে এই দুধপুকুর সংস্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়ল। সেই সূত্রেই রাজ্য সরকার(West Bengal Government) ১১ কোটি টাকা ধার্য করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার তারকেশ্বর মন্দির সহ রাজ্যের অন্যান্য ধর্মীয় ক্ষেত্রগুলি নিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারকেশ্বরের মন্দির এবং তাঁর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলির উন্নয়নের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির নাম দেওয়া হয়েছে তারকেশ্বর উন্নয়ন পরিষদ। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশে তারকেশ্বরের নানান প্রান্তে উন্নতির স্বার্থে প্রায় ৭০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রতি বছর শ্রাবণ ও চৈএ মাসে বিপুল পরিমান পূণ্যার্থীদের ঢল নামে তারকেশ্বরে। সেই জনস্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দূষিত হয় দুধপুকুরও। তাই আবারও তারকেশ্বরের দুধপুকুরের সংস্কারের জন্য ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ করলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তারকেশ্বর উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়(Ramendu Singha Roy) এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ওই টাকা মন্দির চত্বরের উন্নয়নের স্বার্থে ব্যায় করা হবে। দুধপুকুরের জল পরিশোধনের জন্য আরও উন্নত মানের যন্ত্রপাতি আনার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই প্রকল্পটি শীঘ্রই তারকেশ্বর মঠের প্রধান মোহন্ত মহারাজ নিজ হাতে শিলান্যাস করবেন। মন্দিরের উন্নয়নের জন্য সরকারের এই পদক্ষেপে রীতিমতো খুশি হয়েছেন মন্দিরের পুরোহিত থেকে সাধারণ মানুষ।