নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যজুড়ে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়ানোর প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। ঠিক তার বিপরীত দিকে রাজ্যের অধীনে স্কুলগুলিতে দেখা যাচ্ছে পরিকাঠামোর নিদারুণ অভাব। কোথায় পড়ুয়া আছে তো শিক্ষক নেই, কোথাও শিক্ষিকা আছে তো ছাত্রী নেই। কোথাও কোথাও আবার স্কুলের নিজস্ব ভবন বা সুরক্ষিত ভবন না থাকায় পঠনপাঠন চালাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। এই ছবিটাই এবার বদলে যেতে চলেছে রাজ্য সরকারের এক পদক্ষেপ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের বাছাই স্কুলগুলিকে Education and Learning Hub বানিয়ে সেগুলিকে উৎকর্ষ কেন্দ্রের তকমা দেওয়া হবে। আশপাশের দুর্বল স্কুলগুলিকে নানাভাবে সাহায্য করবে তারা। হবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষক ও ছাত্র বিনিময় এবং আরও অনেক কিছুই। স্কুলগুলির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ। রাজ্যের ৬টি জেলায় Pilot Project হিসাবে এই কাজ শুরু হল। সরকারি ভাবে এই প্রকল্পকে চিহ্নিত করা হচ্ছে School Cluster হিসাবে। পরে রাজ্যের সব জেলায় এই School Cluster ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন বাংলাতে ১১টি নার্সিং কলেজ গড়বে মোদি সরকার
রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, মালদা এবং কোচবিহারে এই প্রকল্পটি প্রাথমিক ভাবে শুরু করা হচ্ছে। এর জন্য জেলায় জেলায় প্রশিক্ষণও চলবে। এদিনই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতার প্রশিক্ষণটি রয়েছে কসবার শিক্ষাভবনে, ডিআই অফিসে। কলকাতায় মোট ৪৬টি স্কুল Center of Excelence হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এই এক একটি স্কুলকে হাব হিসাবে ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি হাব স্কুলের অধীনে থাকবে ৮-১০টি দুর্বল স্কুল। শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত ভালো থাকা, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি এবং অন্যান্য পরিকাঠামো যুক্ত নামী মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিকেই হাব হিসেবে গ্রাহ্য করা হচ্ছে। জেলার ক্ষেত্রে জেলা স্কুলগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্প চালু হলে একটি নামী স্কুলে গিয়ে কিছু ক্লাস করার সুযোগ পাবে তুলনায় দুর্বল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তার ফলে তাদের মধ্যে নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাবে বলে আশাবাদী শিক্ষক মহল।
আরও পড়ুন নবান্নে চালু হচ্ছে ফেসিয়াল রিকগনিশন বায়োমেট্রিক সিস্টেম
জানা গিয়েছে এই প্রকল্প যাতে যথাযথ ভাবে রূপায়িত হয় তার জন্য আলাদা করে কমিটিও গঠন করা হচ্ছে। জেলা, মহকুমা, ক্লাস্টার পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাতে সংশ্লিষ্ট স্তরগুলির শীর্ষ আধিকারিকরা রয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রতিমাসে হাব স্কুলগুলি কী কী কর্মকাণ্ড করল, তার রিপোর্টও রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরে নির্দিষ্ট বয়ানে জমা দিতে হবে বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।