নিজস্ব প্রতিনিধি: মোদি সরকারের(Modi Government) আমলে আবারও বঞ্চনার শিকার হতে পারে বাংলা(Bengal)। কেননা চলতি বছরে বাংলায় কেরোসিনের(Kerosene) যোগান এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে মোদি সরকার। এখন বাংলায় প্রতি মাসে কেন্দ্র সরকার ৬০ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন পাঠায়। কিন্তু পুজোর সময় থেকেই তা এক ধাক্কায় ৫ হাজার কিলোলিটারে এসে দাঁড়াতে পারে বলে সাউথ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের কেরোসিন ডিলারদের(Kerosene Dealers) সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দাবি নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলির সঙ্গে দেখা করে। সেখানে আলোচনায় রাজ্যের কেরোসিনের কোটার প্রসঙ্গটি ওঠে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, রেশনের মাধ্যমে দেওয়ার জন্য গোটা দেশের জন্য যা বরাদ্দ করা হয় তার প্রায় অর্ধেক পশ্চিমবঙ্গ পায়। কেরোসিনের বরাদ্দ নিয়ে যে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে চলছিল সেটা যে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে সেটাও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। আর সেই সূত্রেই আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে কেরোসিনের বরাদ্দ যে কমবে না, এরকম কোনও আশ্বাস তিনি আর দেননি।
বাংলার কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত জানিয়েছেন, কেরোসিনের কোটা না কমানোর জন্য তাঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু জবাবে কোনও আশ্বাস মেলেনি। মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গকে বেশি পরিমাণে কেরোসিন দেওয়া ও মামলা প্রত্যাহারের কথা বলেছেন। তাই কোটা কমার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আশঙ্কিত। তবে কেরোসিনের দাম কিছুটা কমানো হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। আগস্ট মাসেই কেরোসিনের দাম লিটারে প্রায় ১২ টাকা কমেছে। অক্টোবর মাসে কেন্দ্রের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক(Petroleum Ministry) নতুন দর জানাবে। তখনই বোঝা যাবে কেরোসিনের দাম আরও কমবে না একই থাকবে। উল্লেখ্য, কেন্দ্র সরকার দেশের রাজ্যগুলির জন্য কেরোসিনের বরাদ্দ প্রতি ৩ মাস অন্তর ঘোষণা করে। এখন বাংলা বাদে সেই রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ মাসে ৯০ হাজার কিলোলিটার। কিন্তু বাংলা সেই জায়গায় পায় মাসে ৬০ হাজার কিলোলিটার।
বাংলার এই বাড়তি বরাদ্দের মূলে রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলা। সেই মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তার জেরে বিগত ২ বছর ধরে কেন্দ্র সরকার অনান্য রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে বরাদ্দ অনেক কমালেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা কমাতে পারেনি। কিন্তু সম্প্রতি সেই মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর তার জেরে বাংলার কোটায় কোপ পড়ার তীব্র সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক আগামী অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। তখনই বোঝা যাবে বাংলার কোটায় ঠিক কত কেরোসিন জুটতে চলেছে। তবে সাউথ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে তা ৫ হাজার কিলোলিটারের আশেপাশে থাকতে পারে। আর এখানেই অনেকে মনে করছেন বিষয়টি নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করতে পারেব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে এই কেরোসিনের ইস্যু নিয়েই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে নতুন করে সঙ্ঘাত বাঁধতে চলেছে।