নিজস্ব প্রতিনিধি: মকরসংক্রান্তির আগের বিকালেই বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে গেল উত্তরবঙ্গের বুকে। বৃহস্পতিবার বিকালে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে গুয়াহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেসের কামরা উল্টে কমপক্ষে তিন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্ঘটনার পরেই উদ্ধারকার্যে ঝাঁপিয়েছে জেলা ও রেল প্রশাসন। রাতে উদ্ধারকার্য চালাতে জেনারেটরের মাধ্যমে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন বিকালে গুয়াহাটিগামী বিকানের এক্সপ্রেস নিউজলপাইগুড়ি স্টেশন ছেড়ে কিছুটা যাওয়ার প্রেই ময়নাগুড়ির দোমোহানী এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। তার জেরে ইঞ্জিনের পর থাকা ৭টি বগি লাইন থেকে ছিটকে পড়ে যায়। ঘটনার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ৩টি বগি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে গিয়েছে। তার জেরে হতাহতের সংখ্যা অনেকটাই বেশি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ঘটনার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে রেলের যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টিও। ইতিমধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এসে উদ্ধারের কাজ শুরু করেছেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনার সময় ট্রেনটির গতিবেগ ছিল মাত্র ৪০কিমি প্রতি ঘন্টা। কিন্তু নানা সংবাদমাধ্যমে দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেন ও কামরাগুলির যে ছবি ফুটে উঠছে তাতে করে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন আদৌ ট্রেনটির গতি ঘন্টায় ৯০কিমির কম ছিল কিনা। কেননা ওই গতি বা তার বেশি গতিতে চলতে থাকা ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে পড়লে তবেই কামরা ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ ঘটা এই দুর্ঘটনায় খুব কম করেও ৫০ জন যাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় একটি উদ্ধারকারী দল। ট্রেনটির ৪-৫টি বগি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। তার জেরে হতাহতের বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ আধিকারিক নীলাঞ্জন দেব জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ বিকানের এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হয়েছে। আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের নিউ ময়নাগুড়ি এবং নিউ দোমোহনি সেকশনে এই ঘটনা ঘটেছে। রিলিফ ভ্যান যাচ্ছে। ডিআরএম-রাও যাচ্ছেন। বাকি তথ্য এখনও জানতে পারিনি। জানলেই জানাব।’ ঘটনার পিছনে কোনও অন্তর্ঘাত কাজ করছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেননা সামনে ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস। সেই দিনের আগে প্রতি বছরই উত্তর পূর্ব ভারতের জঙ্গি সংগঠনগুলি অসম সহ উত্তর-পূর্ব ভারত জুড়ে নাশকতামূলক নানা ঘটনা ঘটানোর হুমকি দেয়। এক্ষেত্রেও এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে। ঘটনার পিছনে কেএলও বা কামতাপুর লিবারেশন অর্গেনাইজেশন জড়িত কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।