নিজস্ব প্রতিনিধি: জনজোয়ারে ভেসে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। তাঁর সেই জনসংযোগ যাত্রায় আমজনতার ভিড় দেখে কার্যত রাতের ঘুম ছুটেছে পদ্মশিবির থেকে কাটা হাত মায় কাস্তে হাতুড়ির নেতাদের। সেই ভিড়ের মাঝেই যদি কেউ অভিষেকের মাথায় হাত রেখে আশির্বাদ করেন, ‘আগামী দিনে তুমি রাজা হবে’, তাহলে তার রেশটা কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে! কার্যত ঘটনার জেরে স্তম্ভিত বাংলা(Bengal)। রাজস্থানের আজমেরে ব্রহ্মা মন্দিরের পূজারী বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) মাথায় হাত রেখে আশির্বাদ করে বলেছিলেন, ‘তুমি প্রধানমন্ত্রী হবে। ব্রাহ্মণের আশির্বাদ মিথ্যা হবে না’। আর শতায়ু বৃদ্ধা বিমলা সরকার(Bimala Sarkar) অভিষেককে দিলেন রাজা হওয়ার আশির্বাদ। সাক্ষী থাকল দেশ, সাক্ষী থাকল বাংলা।
আরও পড়ুন Group-D নিয়োগ বাতিলে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
বুধবার মালদা জেলার বামনগোলা ব্লকে জনসংযোগ প্রচারে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানকার নালগোলা এলাকাতেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ বিমলা সরকারের। কার্যত অভিষেকের অপেক্ষাতেই প্রহণ গুণছিলেন বিমলা। অভিষেক এলাকা দিয়ে যাবেন শুনে আগে থেকেই মেয়ের বাড়ির পাশে মন্দিরের কাছে বসেছিলেন তিনি। সেই মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে অভিষেকের চোখে পড়ে শতায়ূ বিমলাকে। মুহুর্তের মধ্যে কনভয় থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আসেন তৃণমূলের এই তরুণ তুর্কী নেতা। তিনি বিমলার কাছে গিয়ে তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তাঁর আশির্বাদ চান। বৃদ্ধা তারপরেই বলে ওঠেন, ‘অনেক বড় হও। আশীর্বাদ করছি আগামী দিনে তুমি রাজা হবে।’ বৃদ্ধার ভবিষ্যৎবাণী শুনে আপ্লুত হয়ে পড়েন অভিষেক। তিনি এই অভিজ্ঞতার কথা তাঁর ফেসবুক পোস্টেও শেয়ার করেছেন। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘মালদা পৌঁছে সরাসরি ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখলাম। জনসংযোগ যাত্রা চলাকালীন এক শতক ঊর্ধ্ব বৃদ্ধার সঙ্গে সাক্ষাৎ হল। রাস্তার ধারে তিনি আমার সঙ্গেই দেখা করবেন বলে অপেক্ষারত ছিলেন। তাঁর পরিচয়ের বিস্তারিত খবর নিতে গিয়ে জানতে পারি, সেই বৃদ্ধার নাম বিমলা সরকার। জানতে পারি বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সন্তান ক্ষুদিরাম বসু যখন ফাঁসির মঞ্চে জয়গান গেয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ১২ বছর। কত ইতিহাস আজ এভাবেই ছড়িয়ে রয়েছে বাংলার বুকে।’
আরও পড়ুন মহিলা মোর্চার সভানেত্রী পদ থেকে সরানো হলো দিলীপ ঘনিষ্ঠকে
জানা গিয়েছে, বিমলা সরকারের জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুরে। ক্ষুদিরাম বসু যখন ফাঁসির মঞ্চে ওঠেন, সেসময় তাঁর বয়স ছিল ১২ বছর। অর্থাৎ ইতিহাসের সাক্ষী বিমলা আজও বেঁচে রয়েছেন। বৃদ্ধার স্বামী মহেন্দ্র সরকার মিস্ত্রি ছিলেন। বাঁশ কাঠ টিনের বাড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৃদ্ধার চার ছেলে এবং দুই মেয়ে। বামনগোলা ব্লকের মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের স্কুলপাড়া এলাকায় তৃতীয় ছেলে উপেন্দ্র সরকারের কাছেই থাকেন বিমলা। তবে বুধবার অভিষেক আসবেন শুনে মেয়ে ঊষা রানী বিশ্বাসের বাড়ি বাজারপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের পাশে ছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও বিমলা কিন্তু কোনও আব্দার করেননি। তাঁর কাছ থেকে কিছুটি চাননি, বরঞ্চ নিজেই হাত উপুড় করে আশির্বাদ করেছেন অভিষেককে। মমতার ভাইপোকে।