নিজস্ব প্রতিনিধি: কিছুদিন আগেই সামনে এসেছিল বাঁকুড়া জেলায় বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তরুণ সামন্তের বিরুদ্ধে দলের পদ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী হন বিজেপিরই এক নেত্রী। ২০২২ সালের রাজ্যে যে পুরনির্বাচন হয়েছিল তাতে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী পুরসভা এলাকায় একটি ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থীও হয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করে তরুণকে। এখন দেখা যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপিতে হাজার হাজার তরুণ রয়ে গিয়েছে যারা দলেরই মহিলা কর্মী বা নেত্রীদের ভোগ করে চলেছেন। এবার তো আরও বিস্ফোরক ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি(BJP) নেতা দলেরই এক মহিলাকর্মীকে দিনের পর দিন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করে গিয়েছেন। কিন্তু এখন ওই যুবতী বিয়ের দাবি জানানোয় তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। সেই ঘটনা নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায়(Social Media) তুলে ধরার পরে পরেই বঙ্গ বিজেপিতে তো বটেই রাজ্য রাজনীতিতেও ছ্যা ছ্যা কার পড়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে শুভেন্দুর নিজ জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapur) বুকে। যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে তিনি হলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ দেবকমল দাস(Debkamal Das)। শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর একসঙ্গে একমঞ্চে থাকার ছবিও এখন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। আর বিজেপির যে নেত্রী দেবকমলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন তিনি হলেন তমলুক মহিলা মোর্চার সদস্য অসীমা প্রামাণিক। ফেসবুকে যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে অসীমার মুখ পরিষ্কার না দেখা গেলেও সে জানিয়েছে, ‘আমি অসীমা প্রামাণিক। তমলুক সাংগঠনিক জেলা মহিলা মোর্চার সদস্য পদে আছি। আমার সঙ্গে দলের জেলা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেবকমল দাস অত্যন্ত জঘন্য ব্যবহার করেছে। আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নানা জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যায়। আর একাধিক জায়গায় নিয়ে গিয়ে সহবাস করে। আমি যে ভাড়া বাড়িতে থাকি সেখানে এসেও দেবকমল দাস আমার সঙ্গে সহবাস করে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মহিষাদলে সরস্বতী পুজোর দিন একটি পুজোমণ্ডপে নিয়ে যায়। তারপর গেঁওখালি পেরিয়ে ডায়মন্ডহারবার নিয়ে আসে দেবকমল। সেখানে আমি জানতে পারি সে বিবাহিত। তখন আমাকে বলা হয় স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয়। বিবাহবিচ্ছেদ করে আমাকে নিয়েই ঘর বাঁধবে। আমায় বড় নেত্রী করার আশ্বাসও দেয়।’
এই ঘটনার জেরে এখন বিজেপি ও জাতীয় মহিলা কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল(TMC)। তাঁদের দাবি, সন্দেশখালি নিয়ে যখন বিজেপি ধোঁয়া তুলতে চাইছে তখন নিজের ঘরেই মহিলাদের জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অন্য কেউ অভিযোগ তুলছে না, খোদ নির্যাতিতা গোটা ঘটনা বিস্তারিত জানিয়েছেন। শুভেন্দু সন্দেশখালি নিয়ে লম্ফঝম্ফ করছে কিন্তু তাঁর খাসতালুকে দলের অন্দরে নারী নির্যাতন নিয়ে চুপ করে আছেন কেন? জাতীয় নারী কমিশনের কর্ত্রী রেখা শর্মাই বা এখন চুপ করে আছেন কেন? এর পাশাপাশি তৃণমূলের তরফ অবিলম্বে দেবকমল দাসকে গ্রেফতার করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে দাবি, দেবকমলের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনও ঘটনার কোনও অভিযোগ তাঁদের কাছে আসেনি বা জমা পড়েনি। মৌখিক ভাবেও কেউ কিছু জানায়নি। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি আদৌ অসীমা প্রামাণিক কিনা তাও জানা যায়নি, কেননা তাঁর মুখ স্পষ্ট নয়।