নিজস্ব প্রতিনিধি: বামেদের মতোই মমতা বা তৃণমূলের অন্ধ বিরোধিতা করা ছাড়া বঙ্গ বিজেপি(BJP) সামনে যে আর কোনও ইস্যু নেই সেটা আরও একবার সামনে এল বাঁকুড়ায় এক বিজেপি নেতার কুকীর্তির জেরে। বাঁকুড়া(Bankura) জেলার ছাতনা থানার আইসি-কে প্রকাশ্য বিবস্ত্র করার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপি নেতা জীবন চক্রবর্তী(Jiban Chakrabarty)। তাঁর হুমকি ধমকির ভিডিও ইতিমধ্যেই নানা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে। আর তার জেরে কার্যত মুখ পুড়ছে পদ্মশিবিরের। সেই অস্বস্তি থেকে বাঁচতে এখন বিজেপির তরফে দাবি করা হচ্ছে জীবন চক্রবর্তী তাঁদের দলের কোনও নেতাই নয়। যদিও তাতে বিতর্ক থামছে না। কেননা সবাই বুঝছে বিজেপি কার্যত শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে।
জানা গিয়েছে একটি পুকুর কাটাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিতর্কের জেরে যাবতীয় ঘটনার সূত্রপাত। ওই পুকুর কাটার ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাঁকুড়া জেলার ছাতনা(Chatna) থানার দুবরাজপুর এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল বিজেপি। করা হয় রাস্তা অবরোধও। তার জেরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট পড়ে যায়। সেই যানজট কাটাতে মাঠে নামে পুলিশ। ছাতনা থানার আইসি আশিষ জৈন(IC Ashish Jain) নিজে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেই অবরোধ তুলতে মাঠে নামেন। পুলিশ বিজেপি কর্মীদের অবরোধ তুলে নিতে বলার পরেও তা তা না তোলায় পুলিশকর্মীরা সেই সময় তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেন। তার জেরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয়। সেই সময়েই হাতে মাইক নিয়ে আশিষবাবুকে লক্ষ্য করে একের পর এক অশ্লীল মন্তব্য করেন ওই বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা বিজেপি নেতা জীবন চক্রবর্তী।
জীবনবাবু এদিন বলেন, ‘আপনাকে জেলের ভাত খাওয়াব। এই আইসিকে পোশাক খুলে ল্যাংটো করে দেব। আইসি বিরাট মস্তান হয়েছে। আপনাদের মস্তানি আমার জানা আছে। অনেক আন্দোলনের নাম বিজেপি।’ জীবনের এই কথাবার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্কের সূত্রপাত। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন জীবন। সেই সঙ্গে শ্যামসুন্দর মণ্ডল ও দেবীদাস চক্রবর্তী আরও দুই বিজেপির নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। ঘটনার জেরে জীবন ও বিজেপির নিন্দায় সরব হয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মাধব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে পুকুর খনন নিয়ে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। অশিক্ষিতের দল বিজেপি। ছাতনা থানার আইসি ভালো মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি এলাকার গরিব মানুষদের নানান ভাবে সাহায্য করেন।’ অন্যদিকে ঘটনার জেরে দলের মুখ পুড়ছে এটা দেখেই বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য অশোক বিদ জানান, ‘ছাতনার ওই কর্মসূচী বিজেপির দলীয় কর্মসূচী ছিল না। এই ধরনের বক্তব্যও দল সমর্থন করে না। তারপরও কে বা কারা দলীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে উপস্থিত ছিল, তা উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হবে।’