এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

৪৪ একর জমির মালিক ১৮৯৫ জন চাষি! মাথায় হাত প্রশাসনের

নিজস্ব প্রতিনিধি: অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে দেওয়া হবে ফেন্সিং। তার জন্য প্রয়োজন জমির। সেই জমি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেই হাতে নিতে চায় বিএসএফ। কিন্তু সেই জমি জোগাড় করতে গিয়েই এখন কার্যত মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের। কেননা যে জমি অধিগৃহিত হবে সেই জমির পরমাণ মাত্র ৪৪ একর। কিন্তু তাঁর মালিক ১৮৯৫জন কৃষক। এই বিশাল সংখ্যক কৃষককে ধরে ধরে তাঁদের কাছে জমি প্রদানের সন্মতি আদায় করতে গিয়েই এখন কালঘাম ছুটছে ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিকদের। ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমার সুরি-১ ব্লকের নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।

জানা গিয়েছে, সুতি-১ ব্লকের পূর্ব দিকে থাকা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ফেন্সিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। তবে জমি যে শুধু সুতি-১ ব্লক থেকেই নেওয়া হচ্ছে এমন নয়। মুর্শিদাবাদ জেলার ৯টি ব্লক থেকে জমি নেওয়া হচ্ছে। এই জেলার পূর্ব দিকেই রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুর্শিদাবাদ জেলায় রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১২৫.৩৫ কিলোমিটার লম্বা আন্তর্জাতিক সীমান্ত। এই সীমান্তের মধ্যে ৪২.৩৫ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত। বাকিটা পদ্মা নদীর মধ্যে থাকা জলসীমান্ত। সেখানে ফেন্সিং সম্ভব নয়। কিন্তু স্থলভাগের সীমান্তেই এবার ফেন্সিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। তার জন্যই জেলায় নেওয়া হচ্ছে জমি। জেলার যে ৯টি ব্লক থেকে জমি নেওয়া হচ্ছে সেগুলি হল, সামসেরগঞ্জ, সুতি- ১ ও ২, রঘুনাথগঞ্জ-২, লালগোলা, ভগবানগোলা ১ ও ২, রানিনগর-২ ও জলঙ্গি ব্লক। এর মধ্যে ৪৪ একর জমি লাগবে সুতি-১ ব্লকেই। আর সেই জমি জোগাড় করতে গিয়েই কালঘাম ছুটছে ব্লক প্রশাসনিক কর্তাদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাবতীয় সমস্যা দেখা দিয়েছে সুতি-১ ব্লকের নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই। কেননা এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে থাকা ৪৪ একর জমি যা ফেন্সিংয়ের জন্য নেওয়া হবে সেই জমির মালিক ১৮৯৫জন চাষি। এদের মধ্যে ২১.৬৮ শতাংশ চাষি জমি দিতে সন্মতি দিয়েছেন। কিন্তু বাকিরা তা দেননি। ব্লক প্রশাসনের হিসাব বলছে ইচ্ছুক জমিদাতার সংখ্যা ৪১১ জন। কিন্তু জমি দিতে অনিচ্ছুক ১৪৮৪ জন চাষি। অর্থাৎ প্রায় ৭৯ শতাংশ চাষির সম্মতি মেলেনি। এই সমস্যা কাটাতেই স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছিল আহিরণ এলাকায় থাকা সুতি-১ ব্লকের বিডিও অফিসে। সেখানে এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের পাশাপাশি ডাকা হয় নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকেও। সেখানে তাঁদের ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয় চাষিরা যাতে জমি দিতে রাজি হন তার জন্য তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে। গত শনিবার সেই বৈঠক হয়। কিন্তু এই দুই দিনে অনিচ্ছুক জমিদাতা কৃষকদের জমি দেওয়ার জন্য কেউ রাজি করাতে পারেননি। কিন্তু কেন? 

জানা গিয়েছে, জমির দাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনিচ্ছুক কৃষকদের মধ্যে। সুতি-১ ব্লকের বিডিও এইচ এম রিয়াজুল হক জানিয়েছেন, গত ১৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা রাজ্য সরকারের মুর্শিদাবাদ সহ সীমান্তবর্তী জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন কলকাতায়। সেখানে সীমান্তে ফেন্সিং দিতে জমি অধিগ্রহণে তৎপর হতে নির্দেশ দেন। বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব ছাড়াও ছিলেন জেলার পুলিশ সুপাররাও। সেই সূত্রেই সুতি ১ ব্লকের নুরপুরে ৪৪ একর জমি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নুরপুরের ৮৫ ও ৮৬ জে এল নম্বরে যে ৪৪ একর জমি রয়েছে সেই জমিকেই চিহ্নিত করা হয়েছে ফেন্সিংয়ের জন্য। কিন্তু সেই জমির মালিকের সংখ্যা ১৮৯৫জন। এ পর্যন্ত মাত্র ৪১১ জন চাষির কাছ থেকে জমি দেওয়ার লিখিত সম্মতি মিলেছে। বাকিরা এখনও জমি দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দেননি। আর এখানেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। জমি নিয়ে এই সমস্যা জেলার সব ব্লকেই কমবেশি রয়েছে। তবে এখানকার মতো ৪৪ একর জমির মালিক এত সংখ্যক চাষি নন। যাঁরা এখনও সম্মতি দেননি তাঁদের বুঝিয়ে জমি দিতে রাজি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সীমান্তে কাঁটাতারের প্রয়োজনীয়তা এবং তা যে কতটা জরুরি সে সম্পর্কে চাষিদের বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে।

বিডিও এটাও জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় জমির সবটাই চাষযোগ্য নয়। পতিত, খালি জমিও পড়ে রয়েছে এর মধ্যে, যা ফেন্সিংয়ের জন্য নেওয়া হবে। কিন্তু জমি দিতে অনিচ্ছুক চাষিরা বিডিও’র এই মত মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, সীমান্ত লাগোয়া ওই জমি অত্যন্ত উর্বর। আনাজ চাষ হয় ব্যাপক পরিমাণে, তাই জমির দাম এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগেও সীমান্তে সড়ক করতে জমি দেওয়া হয়েছে। এখন সেই দামে জমি দেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া, এই এলাকার ৪৪ একর জমির পরিমাণটা কম নয়। চাষিরা চাষবাসের অনেকটাই ক্ষতি হবে বলে তাঁদের দাবি। আর এই না দেওয়ার জেরেই ১৪৮৪ জন অনিচ্ছুক চাষির কাছ থেকে জমি দেওয়ার সন্মতি আদায় করতেই কালঘাম ছুটছে সুতি-১ ব্লকের প্রশাসনিক কর্তাদের।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

নেই কদর, নেই সম্মান, অসীমের পাশে নেই মতুয়া মহাসঙ্ঘ

‘অমিতাভ বচ্চন আর শত্রুঘ্ন সিনহার ভারত রত্ন পাওয়া উচিত ছিল’ অভিমত মমতার

লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হবে না, আশ্বাস অভিষেকের

কাঞ্চনের সঙ্গে কল্যাণের ব্যবহার  নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীময়ী  

‘পদ্মফুল চোখে সর্ষেফুল দেখবে’, কটাক্ষ অভিষেকের

‘খলিস্তানি বলার প্রতিবাদ করেননি কেন’, আলুওয়ালিয়াকে প্রশ্ন ছুঁড়লেন মমতা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর