নিজস্ব প্রতিনিধি: বেতন না পেয়ে আত্মঘাতী বিএসএনএল কর্মী। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বেসরকারিকরণের পর এই অবস্থায় ঘটেছে বিএসএনএল-এর। আর কর্মীর আত্মঘাতীর জন্য বুকে কালো ব্যাচ পরে বিক্ষোভে সামিল সহকর্মীরা। দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে মানসিক অবসাদে ভুগে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল বিএসএনএল দফতরের এক ক্যাজুয়াল কর্মী। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দফতরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন।
রাজগঞ্জ ব্লকের তোতাই গঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা বীরেন্দ্র রায়। তিনি বিএসএনএল এর অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। তিনি গত ১৫ বছর ধরে বিএসএনএল-এর ফাটাপুকুর এক্সচেঞ্জ অফিসে সিকিউরিটি গার্ড পোস্টে কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ প্রায় এক বছর ধরে তারা বেতন পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে পরিবার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। অভিযোগ দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। বুধবার ভোরে তিনি বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে রাজগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। অপরদিকে এই খবর চাউর হতেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে। এরপর ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বেলার দিকে জলপাইগুড়ি বিএসএনএল দফতরের সামনে তৃণমূল শ্রমিক নেতা স্বপন সরকারের নেতৃত্বে দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন। তাদের আরও অভিযোগ এই নিয়ে গত ৬ মাসে তাদের দুজন কর্মী আত্মহত্যা করল।
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে জলপাইগুড়ি বিএসএনএল কেন্দ্রের অধীনে চার শতাধিক ক্যাজুয়াল / ঠিকাদার কর্মী রয়েছে। এরা কেউ সিকিউরিটি গার্ড, কেউ আবার লাইন ম্যান সহ বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত। এরা কেউ নয় মাস, কেউ দশ মাস, কেউ আবার এক বছর ধরে বেতন পাচ্ছে না। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাদের এই পরিস্থিতি চলছে। বহু আন্দোলন চলেছে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ঘটনায় সৌমিত্র সরকার নামে এক সহকর্মী বলেন অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন বীরেন্দ্র বাবু। কিন্তু দীর্ঘ কয়েকমাস বেতন না পাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আমাদের ধারনা এই কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ঘটনায় তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি স্বপন সরকার বলেন বেতন না পেয়ে মানসিক অবসাদে ভুগে এই আত্মহত্যা। এর আগেও আরও একজন একই ভাবে আত্মঘাতী হলেন। তবুও কেন্দ্রীয় সরকারের ঘুম ভাঙছে না। আমরা চাই অবিলম্বে এদের বেতন দেওয়া হোক। নইলে এরপর বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে। দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ।