নিজস্ব প্রতিনিধি: সতর্ক হোন। সাবধান হোন। আপনার অজান্তে আপনার Bank Account সাফ হয়ে যেতে পারে। হচ্ছেও। Aadhar Card’র Finger Print ব্যবহার করে এই কীর্তি ঘটানো হচ্ছে। মুহুর্তের মধ্যে শয়ে শয়ে মানুষের Bank Account থেকে সব টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে। আর এই ঘটনার জেরে কার্যত রাতের ঘুম ছুটেছে রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের। কেননা তাঁদের নজরে এসেছে ঝাড়গ্রাম জেলায় ইতিমধ্যেই এই ধরনের শ’দুয়েক ঘটনা ঘটেছে যার মধ্যে কিছু ঘটনার অভিযোগ লিখিত আকারে জমা পড়েছে Jhargram Cyber Crime Police Station-এ। আর তাই রাজ্য পুলিশের তরফে সব থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এই মর্মে।
কীভাবে টাকা হাতাচ্ছে প্রতারকেরা? জানা গিয়েছে, Aadhar Enable Payment System বা AEPS-কে হাতিয়ার করে টাকা লুঠ করছে প্রতারকেরা। তারা অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে Aadhar Card’র Finger Print’র Code Number Store করে নিচ্ছে। তারপর তা ব্যবহার করে Bank Account সাফ করছে কাউকে কিছু জানতে বা বুঝতে না দিয়েই। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদার অনুমান, ১০ হাজারের বেশি মানুষের Finger Print’র Code রয়েছে প্রতারকদের হাতে। যার অর্থ এই ঘটনা শুধু ঝাড়গ্রাম জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে তা নয়, কার্যত রাজ্যজুড়েই ছড়িয়ে পড়বে। আর সেই কারণেই রাজ্যজুড়ে সব থানাকেই এই বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, আধার কার্ড তৈরির সময় যে Finger Print নেওয়া হয় তখনই কোনও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারকরা ওই Finger Print’র Code নিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে তাই এখন প্রায় সবাইকে সরকারি নিয়ম মেনে আধার কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা বাইলের সিম কার্ড তোলা থেকে শুরু করে জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আধার কার্ড ব্যবহার করছেন। সেই সব সময়েও তাঁদের অজান্তে Finger Print’র Code চলে যাচ্ছে প্রতারকদের হাতে। তারপরে পরেই AEPS-কে হাতিয়ার করে টাকা আত্মসাৎ করছে তারা।
সব থেকে মজার কথা গোটা ঘটনা এমনভাবে ঘটানো হচ্ছে যে, গ্রাহকদের মনে হবে Customer Service Provider থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। এই সব দেখেই এখন রাজ্য পুলিশের Cyber Crime’র বিশেষজ্ঞরা সবাইকে সতর্ক করে দিচ্ছেন Aadhar Card’র Biometric System Lock করে দিতে। কেননা Biometric System Lock কার্যকর হয়ে গেলে প্রতারকরা আর কিছুই করতে পারবে না। কারণ, সেক্ষেত্রে প্রতারণা করার সময় আধারের সঙ্গে লিঙ্ক করা মোবাইল নম্বরে চলে আসবে OTP। ঝাড়গ্রামের ঘটনাগুলির তদন্তে নেমে আধিকারিকেরা এটাও দেখেছেন যে, প্রতারকরা একবারে ১০ হাজারের বেশি টাকা আত্মসাৎ করতে পারছে না। কারণ ওই পদ্ধতিতে একবারে ১০ হাজার টাকার বেশি তোলা যায় না। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে দফায় দফায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ১জনের টাকা বহু কষ্টে ফেরাতে পেরেছেন আধিকারিকেরা। কিন্তু বাকি টাকা ফেরানো যায়নি। কোন এলাকা থেকে টাকা তোলা হচ্ছে, তার কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ সময় দিল্লি সহ অন্যান্য রাজ্যের Customer Service Provider’র ঠিকানা আসছে। তবে সেই Customer Service Provider-গুলিতে যোগাযোগ করেও কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এই ঘটনা ঠেকাতে রাজ্যজুড়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর ওপরেই জোর দিচ্ছেন রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকেরা।