নিজস্ব প্রতিনিধি: সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ার। মৃত্যুর পর ওই শিশুর দেহ নদীতে ভাসিয়ে দিলেন বাবা মা। তাঁদের বিশ্বাস এর ফলে প্রাণ ফিরে পাবে তাঁদের কন্যা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগর ব্লকের মৃত্যুঞ্জয়নগরে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনা নিয়ে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা। ওই পরিবার কুসংস্কারগ্রস্ত এবং ভুল পথে চালিত হচ্ছে বলে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে নিজেদের বাড়িতে ঘুমাচ্ছিল শ্রাবণী মালাকার নামের দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী। এমন সময় তাকে আচমকা কামড় দেয় কোনও বিষধর সাপ। ভয়ে চিৎকার করে ওঠে সে। মেয়ের চিতকার শুনে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন বাবা মা। এর পর তাকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। কিন্তুর ওঝার কেরামতিতে কোনও কাজ না হওয়ায় এর পর তারা ওই শিশুকে নিয়ে যায় সাগর ব্লক হাসপাতালে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকরা। তৎক্ষণাত তাকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় ওই শিশুর।
হাসপাতাল থেকে শ্রাবণীর দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান তার বাবা মা। বাড়িতে গিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন, একটি কলার ভেলায় মেয়েকে নদীতে ভাসিয়ে দেবেন তারা। যাতে প্রাণ ফিরে পায় সে। সেই মতো কলার ভেলা প্রস্তুত করে তাতে মেয়ের মৃতদেহ শায়িত করে মুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দেন তাঁরা। মঙ্গলবার ভেলা ভাসানোর পর বুধবার নদীর পাড়ের কাছে সেই ভেলা ফিরে আসে। আর তা দেখতে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষজন। মৃত ওই শিশুর বাবা সুব্রত মালাকার বলেন, সাপে কাটার পরে ওঝার কাছে যাওয়া হয়েছিল। তারপরে হাসপাতালে। মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি। মেয়ে ফিরে আসবে এই বিশ্বাসে কলার ভেলায় ভাসিয়ে দিয়েছিলাম।অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা। তাঁরা জানান, সাপে কাটার পর রোগীকে কোনও ওঝার কাছে না নিয়ে গিয়ে একেবারে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষত্রে সেটা যদি হত, তাহলে প্রাণে বাঁচানো যেত ওই শিশুকে, মত বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার আবেদন জানান তাঁরা।