নিজস্ব প্রতিনিধি, বসিরহাট: টাকির দুই বাংলা বিসর্জন দেখতে গিয়ে মোহিত হয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।টাকি গভমেন্ট স্কুল পড়ুয়া দেড় ফুটের গনেশের পর চার ফুটের দুর্গা নজর কাড়তে চলেছে রাজ্যে।টাকি গভমেন্ট স্কুলের(Taki Government School) সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র কুনালের হাতের তৈরি মৃন্ময়ী রূপ যেন পেশাদার শিল্পীর মত ছোঁয়া পেয়েছে ।ফুটে উঠেছে স্বপ্ন। তার প্রতিমা যেন বিদেশে মন্ডপে ঠাঁই পায়। শতাব্দী প্রাচীন দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন দেশ এবং বিদেশের ভৌগলিক মানচিত্রে ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে সাক্ষী থাকে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটকরা।
বাবা-মার কাছ থেকে ইছামতি বিসর্জন এর পুরনো ঐতিহ্য সংস্কৃতি গল্প কথা শুনেছে। এবার ইছামতির পাড়ে টাকি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কাহার পাড়া টাকি গভমেন্টের স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র কুনাল মন্ডল (Kunal Mondal)হাতে খড়ি ।বয়স সাত। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়তো। ইছামতি নদীর মাটি তুলে খেলা করতে গিয়ে শুরু হয় প্রতিমা তৈরীর কাজ। ছোট থেকে বড় সব প্রতিমাই অনায়াসে তৈরি করে ফেলে এই ক্ষুদে শিল্পী। ইছামতি নদীর এটেল মাটি, বিচুলি, বাঁশের কাট দিয়ে তৈরি করে ফেলেছে চার ফুটের দুর্গা।পেশাদার শিল্পীর মতই মৃন্ময়ী রূপ পেয়েছে। শুধু অপেক্ষার রং তুলি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলা চিন্ময়ী রূপ। স্কুলের পড়াশোনার মাঝে যেটুকু সময় পায় সারা বছর কখনো দুর্গা আবার কখনো কালি আবার সরস্বতী। বিশ্বকর্মা থেকে কার্তিক ,গণেশ সবই এই খুদে শিল্পীর হাতে ছোঁয়ায় রাজ্যের বিভিন্ন দূর্গা (Durga)মন্ডপে যায় ।বাবা তারক মন্ডল আগে ভ্যান চালাতো। এখন টোটো চালান।
ছেলেকে একটু অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন। কুনাল সেই অর্থ দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলে দুর্গা প্রতিমা। আর অর্থ তার থেকে উপার্জন হয়। মা চম্পা মন্ডল গৃহবধূ, ছোটবোন তৃষা দু:স্থ পরিবার ছেলের শিল্পী হওয়ার স্বপ্নকে সামনে রেখে অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে সাহায্য করে । মা-বাবা ছোট বোন কুনালের পাশে দাঁড়িয়েছে। যাতে আগামী দিন শিল্পীর সত্তায় ফুটে ওঠে নতুন নতুন শিল্প। কারুকার্যের প্রয়াসে কুনাল অর্থ উপার্জন করে । সেই দিয়ে পড়াশোনার খরচ চালায়। পাশাপাশি সংসারে বাবা-মায়ের একটু সাহায্যের করার হাত বাড়িয়ে দেন। দাদা প্রতিমা তৈরি করার জন্য হাতের কাজে সাহায্যে করে বোন। এ এক শিল্প আর দারিদ্রতার চরম লড়াই।