এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর নজরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যটনকেন্দ্রগুলিই

নিজস্ব প্রতিনিধি: আবারও জেলা সফর শুরু করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফর শুরু হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা দিয়ে। কী করবেন, কী করতে পারেন, সবটা জেনে নিন। উল্লেখ্য, আগামী ১০ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত কথা ছিল সফরের। পরে সেই সূচিতে হয়েছে পরিবর্তন। অশনির কারণে পিছিয়েছিল সফর।  আগামী ১৭ মে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছে যাচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক ও দলীয় বৈঠক করবেন ১৮ মে পর্যন্ত। জেলা সফরে প্রথমদিন প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। দ্বিতীয় দিন তৃণমূল সুপ্রিমো করবেন দলীয় বৈঠক। দুই জেলার ক্ষেত্রেই একই কর্মসূচি রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে আরও নতুন কী থাকছে?  জেনে নিন। আগামী ১৭ মে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৮ মে মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট মাঠে বুথস্তরে দলীয় বৈঠক করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ওইদিনই তিনি রওনা হবেন ঝাড়গ্রাম জেলার উদ্দেশ্যে। আগামী ১৮ মে বিকেলে ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরের দিন আগামী ১৯ মে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে তৃণমূল সুপ্রিমোর রয়েছে দলীয় কর্মসূচি। দুই জেলার বুথ লেভেল, বুথ সভাপতি, পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তৃণমূলের দলনেত্রী। তবে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে তাঁর বিশেষ নজর র‍য়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্রের (Tourist Spot) ওপর।

 জানা গিয়েছে, আগামী ২০ মে থেকে ব্লক ও জেলা স্তরের সংগঠনের পুনর্গঠন হবে। মুখ্যমন্ত্রী আগামী ১৭ মে উদ্বোধন করবেন পশ্চিম মেদিনীপুর প্রেসক্লাবের। মেদিনীপুর শহরের বার্জ টাউনে তৈরি হয়েছে প্রেস ক্লাবের নয়া ভবন। মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবের জন্য দিয়েছিলেন জমি। সরকারের পক্ষ থেকে করে দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের সংগঠনের ভবন। তারই উদ্বোধন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে এসেই তিনি ঘোষণা করতে পারেন কর্ণগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক মর্যাদার কথা। কর্ণগড় পাচ্ছে স্টেট প্রোটেক্টেড মনুমেন্টের (State Protected Monument) মর্যাদা। পেতে চলেছে হেরিটেজ জোন (Heritage Zone) মর্যাদাও। বিশেষ সূত্রের খবর অনুযায়ী, কর্ণগড়ের এই মর্যাদার জন্য আইন অনুযায়ী জারি হয়েছিল জমি সংক্রান্ত প্রথম ও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ ভারতের প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী রানি শিরোমণি’র এই গড়কে প্রত্নতাত্ত্বিক ও হেরিটেজ মর্যাদা দেওয়ার জন্য বারবার আবেদন জানিয়েছিল ভালোবাসি কর্ণগড়,  হেরিটেজ জার্নি ও রানি শিরোমণি ঐক্য মঞ্চ। মুখ্যমন্ত্রী নিজে নজর দিয়েছিলেন এই বিষয়ে। তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টি দেখভাল করছিলেন রাজ্যের জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ড: মানস রঞ্জন ভূঁইয়া এবং রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। পাঠ্যপুস্তকে রানি শিরোমণি ও কর্ণগড়ের ইতিহাস অধ্যায় হিসেবে স্থান পাক, এই দাবিতে সরব গবেষক ও আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত এবং সাংবাদিক কুনাল ঘোষ। সূত্রের খবর, তাও মান্যতা পাচ্ছে শীঘ্রই। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ের ওপর প্রাথমিক ভাবে ঘোষণাও করতে পারেন। আর এতেই উৎফুল্ল আবেদন- আন্দোলনকারীরা।

 ব্রিটিশ ভারতের সম্ভবত প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী রানি শিরোমণি। পারাং নদী ঘেরা প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ- গড়, তাঁর নামেই ‘রানি শিরোমণি গড়’। কর্ণগড়ের দু’টি মন্দির, মহামায়া ও দণ্ডকেশ্বর আগেই পেয়েছিল রাজ্য সংরক্ষিত সৌধের মর্যাদা। এবারে বর্তমান সংরক্ষিত ‘রানি শিরোমণি গড়’ – এর ভেতরে একটি জরাজীর্ণ মন্দির (জনশ্রুতি, শীতলা মন্দির) ও বাহিরমহল আসতে চলেছে স্টেট প্রটেক্টেড মনুমেন্ট- এর তালিকায়। বিশেষ জায়গা চিহ্নিত করে, ঘোষণা হতে পারে হেরিটেজ জোন। রানির অন্দরমহলের ছোট জলাশয়-টিও আসতে পারে রাজ্য প্রত্নতাত্ত্বিক দফতরের আওতায়। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে ঘোষণা হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।

সূত্রের খবর, রাজ্য সংরক্ষিত সৌধ গুলির সামনে বসতে পারে তথ্যসমৃদ্ধ ফলক। গড়ে ঢোকার মুখে বসানো হতে পারে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সমৃদ্ধ ফলক। জীর্ণ এই দুই সৌধের সংস্কার করে তা সংরক্ষণ করা হবে। আলাদা আলাদা করে ঘিরে দেওয়া হতে পারে সৌধ গুলিকে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একাধিকবার রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদল ঘুরে গিয়েছে ঐতিহ্যমণ্ডিত এই গড়।

রাজ্য সরকারের প্রাকৃতিক কেন্দ্রের তালিকায় সম্প্রতি স্থান পেয়েছিল কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি গড়। ধর্মীয় ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের তালিকায় স্থান পেয়েছিল কর্ণগড় (মূল মন্দির)। প্রসঙ্গত, এই মহামায়া মন্দির চত্বরে বসেই শিবায়ন রচনা করেছিলেন কবি রামেশ্বর ভট্টাচার্য। রাজ্যের পর্যটন তালিকায় রয়েছে রানি শিরোমণি গড়। 

হেরিটেজ জার্নি, ভালবাসি কর্ণগড়, রানি শিরোমণি ঐক্য মঞ্চের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, ঐতিহাসিক জীর্ণ ধ্বংসাবশেষ গুলি সংরক্ষণ করুক রাজ্য প্রত্নতাত্ত্বিক দফতর, করা হোক সংস্কার, খাতায়-কলমে দেওয়া হোক ঐতিহাসিক মর্যাদা। সেই আবেদনকে মান্যতা দিল রাজ্য সরকার। রানি শিরোমণি ও কর্ণগড় পাঠ্যপুস্তকে স্থান পাক, এমন আন্দোলন দীর্ঘদিনের। বারবার আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত, সাংবাদিক কুণাল ঘোষ, রানি শিরোমণি ঐক্য মঞ্চ এবং অদ্বিতীয়া সমাজসেবী সংগঠন। হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে গণ পোস্টকার্ড পাঠানো। এই দিন মুখ্যমন্ত্রী পাঠ্যপুস্তকে রানি শিরোমণি ও কর্ণগড়কে অধ্যায় হিসেবে ঘোষণাও করতে পারেন প্রাথমিক ভাবে।

শুধু কর্ণগড় নয়, দাঁতনকে ট্যুরিস্ট সার্কিট হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। তারও উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরময় পাথরা কেন্দ্র সংরক্ষিত অঞ্চল। তবে কেন্দ্র এখনও জমিদাতাদের টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ। তবে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। এখানে রাজ্যের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ক্যাফেটেরিয়া, কটেজ। হয়েছে সৌন্দর্যায়ন। তারও উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। গোয়ালতোড়ে গড়ে উঠছে হাব। থাকছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এই হাবের কাজের শিলান্যাস করতে পারেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। দেশপ্রেমী শহিদ ক্ষুদিরামের জন্ম মোহবনি গ্রামে (মতান্তরে, মেদিনীপুর শহরের হবিবপুরে)। মোহবনি গ্রামের সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে রাজ্যের উদ্যোগে। তার উদ্বোধন হতে চলেছে। এই গ্রাম ঘোষিত হতে পারে আদর্শ গ্রাম হিসেবে।

এর আগে, কলকাতায় প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী কর্ণগড় বিষয়ে বলেছিলেন, ‘ওরা আমাকে কমিটি গড়ে চিঠি পাঠিয়েছে’। তা দ্রুত করে দিতে হবে। এরপরেই তুলেছিলেন গণগণিতে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কথা। সেই কাজ আটকে ছিল অনেকদিন। তবে ম্যখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল দ্রুত করতে হবে এই কাজ। গড়ে তুলতে হবে কটেজ। সেজে উঠেছে গণগণি। এই পর্যটনকেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

প্রথম দুই দফার ভোটে সব বুথে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী

শনিবারের মধ্যে কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছে যাবে ৩৭ ডিগ্রির ঘরে

ঘাটাল লোকসভা জিততে গেলে মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে হবে: দেব

কৃষ্ণনগরে আবার ইডি এলে সরপুরিয়া খেয়ে যাবে, খোঁচা মহুয়ার

শেখ শাহজাহানের জামিনের আর্জি খারিজ, জেল হেফাজতের নির্দেশ

রাজ্যে বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে অলোক সিনহা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর