নিজস্ব প্রতিনিধি: ১০ বছর পর জিটিএ (GTA) শপথগ্রহণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MAMATA BANERJEE)। এদিন তিনি বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন এর আগে পাহাড়ে হয়নি। পাহাড়ের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছেন। পাহাড় উন্নয়ন চায়, শান্তি চায় বলেই জিটিএ চায় পাহাড়ের মানুষ। বলেন, শান্তি বজায় থাকলে পাহাড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। এদিন তিনি বলেন, ‘দখল নিতে আসব না। আসব ভালবাসতে’। তিনি চান, পাহাড় হাসিতে থাকুক।
এদিন একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, দার্জিলিংয়ে নতুন শিল্পনগরী হবে। আর তা হবে ২০০ একর জায়গা জুড়ে। থাকবে শপিং মল, হোম স্টে, ওয়্যার হাউজ, পর্যটকদের থাকার জায়গা। দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পং হবে আইটি হাব। বলেন, মংপুতে হবে হিল ইউনিভার্সিটি। অন্যদিকে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটর নয়া ক্যাম্পাস গড়ে উঠবে। উল্লেখ্য এই ক্যাম্পাস হবে তিন নম্বর। গড়ে উঠবে নতুন এডুকেশন হাব। দার্জিলিং য়ে তৈরি হবে হর্টিকালচার হাব। হবে মাল্টি লেভেল কার পার্কিং। আবার পাহাড়ের বুকে কার্শিয়াং থেকে রোহিনী পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে নয়া রোপওয়ে রুট। মিরিকে গড়ে উঠবে ইকো ট্যুরিজম। চা বাগানে পর্যটক আরও টানতে তৈরি হবে হোমস্টে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি রোধে বিশেষ ভাবনার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দার্জিলিংয়ে এডুকেশন হাব, হর্টিকালচার হাব, মেডিক্যাল হাব ও আর্কিটেকচার হাব গড়ে উঠতে পারে। নেওয়া হয়েছে চায়ে সুন্দরী প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পাহাড়ের ফুটপাতে যারা ব্যবসা করছেন, তাঁদের জন্য দোকানের ব্যবস্থা করা হবে।
বলেন, এত শান্তিতে নির্বাচন এর আগে পাহাড়ে হয়নি। পাহাড়ের মানুষ করে দেখিয়েছেন। এইজন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, পাহাড় উন্নয়ন চায়, শান্তি চায় সেজন্য পাহাড়ের মানুষ চায় জিটিএ। বলেন, পাহাড়ের মানুষ যা পারে অন্য কেও তা পারে না। এদিন তিনি বলেন, ১০ বছরে জিটিএ-র জন্য সরকার দিয়েছে ৭ কোটি টাকা। বলেন, পাহাড়ে শান্তি থাকলে অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। তারপরেই বলেন, গড়ে উঠবে নিউ ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব, ফার্ম, হোম স্টে, সেফ হাউস, শপিং মল, রেস্টুরেন্ট। তিনি বলেন, পাহাড়ে শান্তি বজায় থাকলে আইটি হাবকে আসতে অনুরোধ জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এও বলেন, দার্জিলিংয়ের মত কালিম্পং এবং কার্শিয়া নিউ উন্নয়ন হবে। বলেন, পর্যটন বেড়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে রয়েছে শিল্প, শিক্ষার সম্ভাবনা। আইটি ইন্ডাস্ট্রি সবচেয়ে ভালো হবে দার্জিলিংয়ে। চা বাগানের শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন সরকার যখন ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তখন চা শ্রমিকদের দৈনিক বেতন ছিল ৬৭ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২০২ টাকা। বলেন, যাঁদের মাসিক বেতন তাঁদের ১৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি হয়েছে। পরবর্তীকালে হবে আরও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি পাহাড়ে অশান্তি হতে দেবেন না। জনগণের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, কারও কথায় কেউ যেন অশান্তির প্ররোচনায় পা না দেয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে জল। আর কাওকে ভুগতে হবে না জলকষ্টে। জল সংরক্ষণের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বার্তা, বিভিন্ন ট্যাংকের মাধ্যমে ঝর্ণার জল ভরে তা সংরক্ষণ ও সরবরাহ করতে হবে। তারপরেই বলেন, কয়েকটি ঝর্না চিহ্নিত করে ড্রিংকিং ওয়াটার প্লান্ট তৈরির কথা। এদিন তাঁর ঘোষণা, মহিলারাও গাড়ি চালাক। সেই উদ্যোগ নেবে সরকার। ইতিমধ্যেই রয়েছে গতিধারা প্রকল্প। গাড়ি কেনার জন্য এই প্রকল্পের বাইরেও পাহাড়ের মানুষদের জন্য বিশেষ সুবিধার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরের আধিকারিকরা আরও ভাবুক কী করে আরও বেশি হাত গড়ে তোলা যায়। বলেন, দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকে হর্টিকালচার এক্সপার্ট হাব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবের সুবিধা রয়েছে অনেক। রাজ্যের মানুষ উপার্জনের জন্য থাকুক রাজ্যেই, আসুক পাহাড়ে। কাজের জন্য কাউকে বাইরে যেতে হবে না।