নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলা তথা দেশের জমি আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapur) নন্দীগ্রাম(Nandigram)। বাম জমানায় সেই নন্দীগ্রামের বুকেতেই ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর ৩ জমি আন্দোলনের সমর্থককে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই সিপিএমের(CPIM) নেতারাই আজ সদলবলে গিয়েছেন বিজেপিতে(BJP)। আর তার জেরেই নন্দীগ্রামে সন্ত্রাসের অধ্যায় ফিরিয়ে আসছে। একের পর এক তৃণমূলকর্মী হয় খুব হচ্ছে নাহয় তাঁদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে। রবি ভোরে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে নাম করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) ও বিজেপিকে বিঁধলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। এদিন নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়্যায় ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে জমি আন্দোলনের শহিদ স্মরণ কর্মসূচির আয়োজন করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কর্মসূচিতেই যোগ দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, শেখ সুফিয়ান সহ জেলা নেতৃত্ব।
এদিন ভোরে তৃণমূল(TMC) নেতৃত্ব ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করে। সকাল সাড়ে ৬টার পর বিজেপিও ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে সোনাচূড়ার শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়। ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর ভোরে জমি আন্দোলনের সমর্থক ভরত মণ্ডল, শেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মণ্ডলরা খুন হয়েছিলেন সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর হাতে। তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশে শহিদ তর্পণ করা হয় প্রতি বছর এই দিনে। এবারও ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে তাই শহিদ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। ভাঙাবেড়ায় ফলকে মাল্যদান করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেখানেই তিনি নিশানা বানান বিজেপি ও শুভেন্দুকে। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জমিরক্ষার লড়াই পৃথিবীর মানচিত্রে নিজের রক্ত দিয়ে লিখেছে নন্দীগ্রাম। ১৭ বছর পরেও শীতের সকালে এত মানুষের সমাবেশ প্রমাণ করে দিচ্ছে ক্ষত কতটা গভীর ছিল এবং রাজনৈতিক বদলার শপথটা কতটা দৃঢ়। ওদের শহিদ স্মরণের কোনও অধিকার নেই। আমার উপস্থিতি শুভেন্দুদের চক্ষুশূল হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে।’
এর পাশাপাশি কুণাল বলেন, ‘এক সময় যে সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছিল, এখন সেই সিপিএম নেতারাই দল বদলে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। আর তাঁদের সঙ্গে নিয়েই নন্দীগ্রামের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী! নিজের রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণ করতে গিয়ে হার্মাদদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন শুভেন্দু। আমার নামে রাতের অন্ধকারে গো ব্যাক স্লোগান দিয়ে পোস্টার মারা হয়েছে। একে আমি আসলে ‘ওয়েলকাম’ পোস্টার হিসেবেই দেখি। আমার উপস্থিতি বিজেপির চক্ষুশূল হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ১০ হাজার ভোটের লিড পেয়েছিল। আসন্ন লোকসভা ভোটে এখান থেকেই ২০ হাজার ভোটের লিড বার করে বিজেপিকে দেখিয়ে দিতে হবে।’