নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ সেই বহু প্রতীক্ষিত ১৮ মার্চ। এদিনই সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court) বাংলার(Bengal) সরকারি কর্মচারীদের(West Bengal State Government Employees) মহার্ঘ্য ভাতা বা DA মামলার(DA Case) শুনানি রয়েছে। মামলার দিকে তাকিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। কেননা মামলায় জিতলে তাঁরা পেয়ে যাবেন মোটা টাকা। Group-A পদের কর্মীরা পাবেন প্রায় ৪ লক্ষ টাকা করে। এই পদে সাধারণত আমলারা কাজ করেন। Group-B বা পুলিশের কর্মী থেকে আধিকারিকেরা পাবেন ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে। সাধারণ কর্মী অর্থাৎ Group-C ও Group-D’র কর্মীরা পাবেন যথাক্রমে ২ লাখ ২০ হাজার ও ২ লক্ষ টাকা করে। যদিও নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে এটা প্রথম মামলা। এই মামলায় রাজ্য সরকার হারলেও বৃহত্তর বেঞ্চে সুপারিশ করার রাস্তা খোলা থাকবে। তারপরেও সাংবিধানিক বেঞ্চে তা যেতে পারে। তাই খুব দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। একই সঙ্গে নবান্নের আধিকারিকেরা এটাও জানিয়েছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) বার বার বার্তা দিয়েছেন যে মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করা যেমন আবশ্যিক নয় ঐচ্ছিক, তেমনি কত শতাংশ হারে তা দেওয়া হবে সেটাও রাজ্য সরকারই ঠিক করবে। আর তাই রাজ্য সরকারও এই অবস্থান নিয়েও শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।
জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা DA মামলার শুনানি এদিন সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য নথিভুক্ত হয়ে আছে। বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির তালিকায় ৬০ নম্বরে মামলাটি আছে। এর আগে, ৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটি তালিকাভুক্ত থাকলেও সময়ের অভাবে শুনানি হয়নি। মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন সেদিনই ধার্য করে দেওয়া হয়—১৮ মার্চ। DA মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার ২০২২ সালের অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টে Special Leave Petition বা SLP দাখিল করে। তারপর ওই বছরের নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ১১ বার শুনানির জন্য উঠেছে। কিন্তু কোনওবারই বিস্তারিত শুনানি হয়নি। সূত্রে জানা গিয়েছে, এরন আগে কয়েকবারের শুনানির তালিকায় SLP’র নিষ্পত্তি করার বিষয়টি উল্লেখ করা ছিল। এদিনের শুনানির ক্ষেত্রেও সেটা আছে। যদি এদিন মামলার বিস্তারিত শুনানি হয় তাহলে আজই SLP’র নিষ্পত্তি হতে পারে। যদিও আইনজীবীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট কোনও SLP গ্রহণও করতে পারে কিংবা তা বাতিলও করতে পারে। আবার এটা নিয়ে আরও শুনানিও করতে পারে শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে DA মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে ফের একবার তা পিছিয়ে যায়। এই আবহে এদিন মামলার পরবর্তী শুনানি হয় কিনা সেদিকেই তাকিয়ে আছেন বাংলার সরকারি কর্মচারীরা। এদিন সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মামলাটি উঠবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে। সুপ্রিম কোর্টের কজলিস্ট অনুযায়ী, এদিন ৭ নম্বর আদালত কক্ষে ৬০ নম্বরে মামলাটি নথিভুক্ত আছে। তবে এই ক্রমিকসংখ্যা সত্ত্বেও সরকারি কর্মীদের মনে আশা দেখা দিয়েছে অন্য এক কারণে। আজ এই এজলাসে Final Disposal at Admission Stage হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে একমাত্র এই বকেয়া DA সংক্রান্ত মামলাটি। তবে যদি এদিনও শেষ পর্যন্ত মামলাটি আবারও শুনানির জন্য পিছিয়ে যায়, তাহলে হয়ত সেই হোলির পরে মামলাটি ফের উঠতে পারে শীর্ষ আদালতে।