নিজস্ব প্রতিনিধি: দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি কারখানায় যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে ঘটল দুর্ঘটনা। আর সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। জানা গিয়েছে মৃত শ্রমিকের নাম তরুণ ঘোষ। চল্লিশ বছরের আশপাশে তাঁর বয়স।
কারখানার শ্রমিক তরুণ ঘোষের মৃত্যু ঘিরে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয় কারখানা চত্বরে। বিক্ষোভ দেখান মৃত শ্রমিকের আত্মীয় পরিজনরা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর শহরে রবিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কারখানা কর্তৃপক্ষকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়। কাজ করতে গিয়ে শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না পাওয়া গেলে বন্ধ থাকবে কারখানার যাবতীয় কাজ, হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়।
কারখানার অন্যান্য শ্রমিক সূত্রে জানা গিয়েছে, লোহার রডের ওই কারখানায় ম্যাগনেটিক ক্রেনের সাহায্যে মালপত্র ওঠানামা করানো হয়। যান্ত্রিক সমস্যার কারণে ক্রেনের চুম্বকশক্তি হঠাৎ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আর এর ফলে ভারী জিনিসের ধাক্কা লাগে তরুণের সঙ্গে। তড়িঘড়ি তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রবিবার সকালে কারখানার ভিতরে কাজ করার সময় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। তরুণ ঘোষের মৃত্যুর পর উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় কারখানার গেটের সামনে। বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন প্রক্রিয়া। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে লাউদোহা থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে যান পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবির পাশাপাশি মৃতের পরিবারের একজনের চাকরির দাবিতে সরব হন আন্দোলনকারীরা। এরপর কর্তৃপক্ষের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, মৃত শ্রমিকের পরিবারকে মাসে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। যতদিন মৃত শ্রমিকের চাকরি ছিল ততদিন এই টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। যেহেতু কারখানায় সব পুরুষ শ্রমিক কাজ করে তাই মৃত শ্রমিকের স্ত্রীকে কাজে নেওয়া সম্ভব নয় বলে যুক্তি দেওয়া হয়। তাই কেবল টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ মেটাতে চান কর্তৃপক্ষ। আন্দোলনকারীদের চাপে অবশেষে এককালীন আট লক্ষ ও প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর আন্দোলন তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় পশ্চিম বর্ধমানের জেলা বিজেপি নেতৃত্বও অবিলম্বে শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।