নিজস্ব প্রতিনিধি: কেষ্টগড়ে কেষ্টকে ছাড়াই এবার লোকসভার নির্বাচন(Loksabha Election 2024) হচ্ছে। জেলার দুটি আসনই এখন রয়েছে তৃণমূলের(TMC) হাতে। সেই দুই আসনে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ার মতো কেউ নেই। তাই অনেকটাই স্বস্তিতে ভোট প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। সেই স্বস্তি আরও নেমে এসেছে খোদ বিজেপির(BJP) দাপুটে নেতা দুধকুমার মন্ডল(Dudh Kumar Mondol) বিদ্রোহী হওয়ায়। অনেকেই ভেবেছিলেন, এবারে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করবে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের শতাব্দী রায় আর বিজেপির দুধকুমার মন্ডলের একটা টক্কর হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিজেপি দুধকে এবারে প্রার্থীই করেনি। আর সেই সুবাদে দুধ কার্যত জানিয়েই দিয়েছেন, ‘সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে জিততে পারবে না দল।’ আর তাতেই স্বস্তি নেমে এসেছে তৃণমূলের শিবিরে। কেননা এই একা দুধই ছিলেন বীরভূমের(Birbhum) মাটিতে যে কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারতেন তৃণমূলের দিকে।
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে প্রাক্তন IPS দেবাশিষ ধরকে। এই দেবাশিষই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। তাঁর আমলেই ঘটে শীতলকুচিতে বুথের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪জন ভোটারের মৃত্যুর ঘটনা। স্বাভাবিক ভাবে এহেন দেবাশিষকে প্রার্থী করায় বিজেপির ওপর ক্ষুব্ধ বীরভূমের একটা বড় অংশের মানুষ। ক্ষুব্ধ বিজেপির অনেক নেতাই। গত কয়েকমাস ধরে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের জন্য বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দুধকুমারবাবুর নাম নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে জোর চর্চা হচ্ছিল। তাঁর অনুগামীরা তুলি হাতে দেওয়াল লিখনেও নেমে পড়েছিলেন। দীর্ঘদিন বসে থাকার পর দলীয় কর্মসূচিতেও অংশ নিতে শুরু করেছিলেন দুধকুমারবাবু। কিন্তু তাঁকে এখন প্রার্থী না করায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে। লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন দুধকুমারবাবু। তাঁর অনুগামীরাও একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন। অনেকেই প্রার্থীর নাম বাদ দিয়ে দেওয়াল লিখন শুরু করে দেন। কিন্তু শনিবার রাতে সেই হিসাব আর মেলেনি।
প্রার্থী হতে না পেরে দুধকুমারবাবু জানিয়েছেন, ‘যেভাবে আমার কাছে খবর এসেছিল, তাতে আমি লড়াই করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু দল এখন যাকে উপযুক্ত মনে করেছে, তাঁকে প্রার্থী করেছে। যদি দল বা প্রার্থীর পক্ষ থেকে আহ্বান আসে তাঁর হয়ে প্রচার করব। দল ভাবছে, ‘মোদি ম্যাজিকে’ ভোট হবে। প্রচার, দেওয়াল লিখন গৌণ ব্যাপার। কেন্দ্রীয় বিজেপির ভরসাতেই ভোট হবে। নির্বাচনে ফল বেরলে সেটা বোঝা যাবে। তবে সাংগঠনিক শক্তির জোরে বিজেপি এখানে জিতবে, এমন বিশ্বাস আমার নেই।’ আর দুধকুমারের অনুগামীদের দাবি, ‘কেন সরকারি আমলাকে কর্মীদের মাথার ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হবে? এভাবে প্রার্থী করা হলে সংগঠন করার লোক পাওয়া যাবে না। বিজেপির এই ক্ষোভকেই হাতিয়ার করছে তৃণমূল। ক্ষুব্ধ বিজেপির ভোট যাতে জোড়াফুলে টেনে আনা যায় এখন তার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে কেষ্টগড়ে।