নিজস্ব প্রতিনিধি: বছরে হাজারের বেশি প্রসূতি মৃত্যু যে কোনও উন্নয়নশীল রাজ্যের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তির। সেই অস্বস্তির মুখেই পড়তে হয়েছিল বাংলাকে(Bengal)। কেননা পর পর ৩টি অর্থবর্ষে বাংলায় প্রসূতির মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের বেশি। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বাংলায় মারা গিয়েছিলেন ১২৩৪ জন প্রসূতি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে মারা যান ১২৩৪ জন প্রসূতি এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বাংলায় মারা গিয়েছেন ১১১২ জন প্রসূতি। তবে এই পরিসংখ্যানে স্বস্তি এখানেই যে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ১২২জন কম প্রসূতি মারা গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, গত তিনবছরে সবচেয়ে কম প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে এবার। আর এই জন্য রাজ্যের চিকিৎসক মহল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) কড়া পদক্ষেপকেই চিহ্নিত করেছেন। যদিও এখনই এই নিয়ে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা আছে বলে তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, মৃত্যুর সংখ্যা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। এমনই মনে করছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরাও।
আরও পড়ুন বন্যা ঠেকাতে বিশেষ বৈঠক নবান্নে আগামি মঙ্গলবার
গত বছর মুখ্যমন্ত্রী প্রসূতি মৃত্যু ঠেকাতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ নেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল রেফার ঠাকানো। সেই সঙ্গে জোর দেন গর্ভধারণকালে প্রসূতিদের নিয়মিত চেক আপের ক্ষেত্রেও। নজর দিতে জোর দেন অ্যানিমিয়া, অপুষ্টি এবং বারবার মা হওয়া ঠাকানোর দিকেও। পাশাপাশি গ্রামেগঞ্জে আশাকর্মীদের প্রচার বাড়ানোর দিকেও জোর দিতে বলেন। যার সামগ্রিক ফল, ধীরে ধীরে হলেও রাজ্যে কমছে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা। এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের(Health Department) দাবি, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তাঁরা লক্ষ্যই রেখেছেন প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের নীচে নামিয়ে আনার। তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, আগের তুলনায় মায়েদের স্বাস্থ্যে নজরদারি কিছুটা হলেও বেড়েছে। কিন্তু তারপরেও রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় দেখা যাচ্ছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে যে সব ভাবী মা ভর্তি হতে আসছেন, তাঁদের কারও হিমোগ্লোবিন ৪, কারও ৫। ফলে মৃত্যুর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রতি ১ লক্ষ প্রসবে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যাকে Metarnal Mortality Rate বা MMR বলা হয়। ২০২২ সালে শেষ প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারের Sample Registration System বা SRS অনুযায়ী বাংলায় মাতৃ মৃত্যুর হার ১০১। যদিও দু’বছর আগেকার হিসেব সংগ্রহ করে সেই রিপোর্ট তৈরি হয়। সেদিক থেকে সদ্য সমাপ্ত অর্থবর্ষের রিপোর্ট SRS-এ আসতে আসতে ২০২৫ হয়ে যাবে।