নিজস্ব প্রতিনিধি গোবরডাঙ্গা: নেই সেই চাকচিক্য ,হারিয়ে গিয়েছে জৌলুস। অনেকদিন আগেই চলে গিয়েছে জমিদারি। বেশকিছু নিয়ম-নীতিরও পরিবর্তন করা হয়েছে। তবুও পুরনো ঐতিহ্য মেনে এখনও ঠাকুর দালানে এক চালার প্রতিমায় পুজো হয়ে আসছে উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম প্রাচীন শহর গোবরডাঙা জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো। এবছর এই পূজা ৩১২ বছরে পদার্পণ করল।ষষ্ঠীতে ও সন্ধিপুজো শুরু করার আগে কামান দাগা হত।
আশেপাশের মানুষকে জানান দেওয়া হতো পুজো শুরু হচ্ছে। একটা সময় এই পুজোতে মাকে উৎসর্গ করে ১৩ টা পাঠা, ২ টো ভেড়া বলি দেওয়া হতো। তবে ১৯৯৭ সালের পর সেই বলি প্রথাও উঠে গিয়েছে। এখন মধু ও চিনি ভোগ দেওয়া হয় মাকে। পুজো উপলক্ষে আসতেন রাজ্যের বড় বড় সংগীতকার ও সংগীত বাদকেরা । নিয়ম করে বসতো ক্লাসিকাল মিউজিকের(Clasical Music) আসর। এক সময় পুজোর কটা দিন আত্মীয়-স্বজন এবং বিখ্যাত বিখ্যাত লোকেরা আসতেন এই জমিদার বাড়ির পুজোতে। বহু মানুষকে ভোগ খাওয়ানো হতো। তবে এখন তা যেন অতীত স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই নয় ।
সেইআরম্বরও আর নেই। তবে এখন এলাকার কিছু মানুষ ও জমিদার বাড়ি সদস্যরাই পুজোয় উপস্থিত থাকেন। জমিদার বাড়ির সামনে থেকে বয়ে গিয়েছে যমুনা নদী। নিয়ম করে দশমির পুজোর পর জোড়া নৌকো বেঁধে প্রতিমা নিয়ে গিয়ে নৌকার মধ্যেই চলতো গান-বাজনা ও পরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হতো। কথিত আছে, জমিদারদের বাড়ির প্রতিমা বিসর্জনের পর এলাকার অন্যান্য প্রতিমা বিসর্জন হত। তবে সেই রীতি আজ আর কেউ অনুসরণ করে না। তবে পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখে ঐতিহ্যবাহী গোবরডাঙ্গার(Gobardanga) জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো আজও একই ভাবে হয়ে আসছে। তবে করোনা কালে দু’বছর মূর্তিপূজো বন্ধ ছিল ।সে সময় জমিদারদের বাড়ির কালীমন্দিরে ঘটে নিয়ম করে দুর্গাপুজোর আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে। এবছর আবার পুরনো কথা অনুযায়ী মা দুর্গার আরাধনায় মেতে উঠছে জমিদার বাড়ি।