নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁর নিশানায় কেন্দ্র(Central Government)। তাঁর নিশানায় গেরুয়া(BJP)। তাঁর নিশানায় বাম(Left)। তাঁর নিশানায় মিডিয়াও(Media)। তাঁর নিশানায় ED ও CBI-ও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার(South 24 Pargana) জয়নগর-মজিলপুর পুরসভা লাগোয়া বহড়ু থেকে এদিন তিনি নিশানা বানানোর সঙ্গে সঙ্গে সাফ জানিয়ে দিলেন ‘বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না। বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করব না। বিনা যুদ্ধে নাহি দিব, সূচাগ্র মেদিনী।’ নজরে তৃণমূল সুপ্রিমো ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতায় ফেরার পথে বহড়ুতে সরকারি পরিষেবা প্রদানের মঞ্চ থেকেই এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার তিনি একসারিতে কেন্দ্র, বিজেপি, বাম, মিডিয়া, ED ও CBI-কে একযোগে নিশানা বানালেন। সেই সঙ্গে বার্তা দিলেন আমজনতাকে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না। বার্তা দিলেন দলকেও।
এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রের সরকার এখান থেকে ট্যাক্স তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের কিছুই দিচ্ছে না। আমরা যা বলি তা করি। ওরা তা করে না। এ বছরে কেন্দ্র থেকে ৭৬টি টিম এসেছে। কিছু পেয়েছে? কিছু পায়নি। তারপরেও ওরা টাকা দেয় না। ওদের লজ্জাও নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলছেন মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে মেটাবে। বলে সব গেরুয়া করতে হবে। আমি কোনও দলীয় লোগো লাগাতে বাধ্য নই। আমি কোনও রাজনৈতিক দলের লোগো লাগাতে বাধ্য নই। গর্ভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার লোগো লাগাতে বাধ্য। ভোটের আগে ধর্ম ধর্ম করতে আসে, তারপর টাকা দেয় না। কিছু টিভি চ্যানেল আছে সারাদিন দেখায় ওই রাস্তা খারাপ, জল নেই। ওই সব চ্যানেল দেখবেন না। মাথা খারাপ হয়ে যাবে। ওরা সত্যিটা দেখায় না। ওরা বাংলার উন্নয়ন চায় না, দেখতেও পায় না, দেখায়ও না। আমি বলি তোমাদের অনেক টাকা আছে। যেটা কেন্দ্র দিচ্ছে না তোমরা দিয়ে দাও। আমরা সব করে দেব। বিজেপি উল্টো পাল্টা ভিডিয়ো ছাড়ে। ওইসব ভিডিয়োতে বিশ্বাস করবেন না। থানায় ডায়রি করুন। নিজেরা আসল ঘটনার ভিডিও তুলে ছাড়ুন। বিজেপি ভিডিয়ো করছে। মা বোনেরা পাল্টা ভিডিয়ো করে বলুন, ওটা ফেক।’
এর পাশাপাশি মমতা এদিন নিশানা বানিয়েছেন বামেদের। চিটফান্ড নিয়েও সরব হয়েছেন। বলেছেন, ‘আমরা চিট ফান্ড সমর্থন করি না। ২০১২ সালে আমরাই প্রথম গ্রেফতার করেছিলাম সারদার মালিককে। এজেন্সিরা ওদের সম্পত্তি নিলেন। সেগুলো ফেরত দিলেন? চিটফান্ড সিপিএম এনেছিল। ওদের কেউ গ্রেফতার হয়েছে? সব ব্যাপারেই তৃণমূল। আসলে তৃণমূলের নামে কাঁপে। তাই তৃণমূলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাজিয়ে নাটক করে তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ভাবছে ভোটের আগে সবাইকে গ্রেফতার করলে এলাকা খালি হবে। আর পুরো বিজেপি ডুগডুগি বাজাবে। অত সোজা নয়। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। বিজেপি অনেক লোক এপাশে ওপাশে টাকা দিয়ে ঢুকিয়েছে। সব সাধু সাধু নয়, সব চোর চোর নয়। ৩৪ বছরে সিপিএম মানুষের মুণ্ডু নিয়ে খেলেছে। ওদের সঙ্গে আপোশ করব না। আজ টিভির পর্দায় বসে বড় বড় কথা বলে। কী করছিল ৩৪ বছরে? নাপিত-ধোপা-স্কুল-কলেজ বয়কট, কৃষিজমি দখল করেছে। সবাইকে বলবো ভোটার কার্ডে নাম তুলুন। নজর রাখুন ভোটার কার্ডে। নাহলে ওরা নাম বাদ দিয়ে দেবে। ক্যা ক্যা করবে। ইঁদুর-চামচিকিরা যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার অর্জিত পয়সা লুঠ করে নিয়ে যাবে। সিজার লিস্টও পাবেন না। মুখ্যসচিবকে জানতে তাইব, বকটুইতে যে জিনিসপত্র নিয়েছিল সিবিআই সেগুলি কি ফেরত পাওয়া গিয়েছে? কেউ কেউ বলছে আমি গুণ্ডাদের নেতা। সারা জীবন করে এলাম মানুষের কাজ। আমি নেতা নই। কর্মী। মানুষের পাহাড়াদার। কোনও মানুষ বিপদে পড়লে আমরা ছুটে যাই।’