নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের(Bengal) চটশিল্পের(Jute Mill Industry) অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের(Retired Workers) বহু মালিক Provident Fund বা PF ও Gratuity বাবদ প্রাপ্য মিটিয়ে দেন না। শিল্পের খারাপ অবস্থার কারণ দেখিয়ে মালিকরা এই পাওনা মেটানোর বিষয়ে গড়িমসি করেন, এমনকি সেই টাকা তাঁরা মেরেও দেন। এনিয়ে সরকারের কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা রয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলিও সরব। অবশেষে নড়েচড়ে বসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের(West Bengal State Government) শ্রম দফতর(Department of Labour)। ভবিষ্যতে এই ধরনের অভিযোগ যাতে আর না আসে, তার জন্য পাকাপাকি বন্দোবস্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। এই পরিকল্পনায় শ্রমিকদের পাশাপাশি মালিকদের সুবিধা-অসুবিধার কথাও মাথায় রেখেছে দফতর।
রাজ্যের অধিকাংশ চটকল মালিক PF’র ক্ষেত্রে বকলমে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ট্রাস্ট ব্যবস্থার পথে হেঁটেছেন এতদিন। শ্রম দফতর এবার ঠিক করেছে, চটশিল্পে PF’র ক্ষেত্রে এই ট্রাস্ট ব্যবস্থায় আর তাঁরা সায় দেবে না। রাজ্যের অনুমোদন না পেলে EPFO কর্তৃপক্ষও ট্রাস্ট ব্যবস্থা চালু করার চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিতে পারবে না। তাঁরাও অবশ্য এই ট্রাস্ট ব্যবস্থা বন্ধ করার পক্ষে। এ বিষয়ে তাঁরা রাজ্যের শ্রম দফতরকে চিঠিও দিয়েছে। সব দিক বিচার করে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক সম্প্রতি চটকল মালিকদের সংগঠন IJMA বা Indian Jute Mills Association-কে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ট্রাস্ট ব্যবস্থার যাবতীয় অনুমোদন তাঁরা প্রত্যাহার করে নেবেন। পরিবর্তে মালিকদের এখন থেকে PF’র টাকা EPFO কর্তৃপক্ষের কাছেই জমা করতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে। এর ফলে শীঘ্রই এই শিল্পে PF সংক্রান্ত বঞ্চনার অভিযোগ কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Gratuity’র ক্ষেত্রে আবার শ্রম দফতর ঠিক করেছে, আগামী দিনে চটকলে যেসব নতুন কর্মী কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের জীবনবিমা নিগম বা LIC’র আওতায় Group Gratuity Scheme-এ যুক্ত করা হবে। সেক্ষেত্রে অবসরের পর Gratuity’র প্রাপ্য টাকা পাওয়ার বিষয়ে শ্রমিকরা অনেকটা নিশ্চিত থাকতে পারবেন। পাশাপাশি, একলপ্তে Gratuity’র মোটা টাকা মেটানোর ঝক্কিও বইতে হবে না মালিকদের। তাঁরা প্রতি মাসে শ্রমিক পিছু একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ Premium মেটালেই সব দায়িত্ব শেষ। অবসরের পর Gratuity’র টাকা মেটাবে জীবনবিমা নিগম। শ্রমিকের অকালমৃত্যু ঘটলে এই খাতে প্রাপ্য তারাই নির্দিষ্ট Nominee’র হাতে তুলে দেবে। PF এবং Gratuity নিয়ে সরকারের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের জুটমিলগুলির শ্রমিক সংগঠনগুলি। আপত্তি তোলেনি IJMA-ও। শ্রমিকদের নয়া বেতনের বিষয় নিয়ে যে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা চলছে, সেখানেই উভয়পক্ষ এনিয়ে সম্মতি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী মাসে চটশিল্পের কর্মচারীদের নয়া বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।