নিজস্ব প্রতিনিধি জলপাইগুড়ি: শেষ কথা দুর্ঘটনার রাতে। তারপর থেকে আর কোনো হদিস মেলেনি দুই ছেলের। শুধু দুই ছেলেই নয় একই পাড়ার নিখোঁজ আরও এক ব্যক্তি। ঘটনায় শোরগল পড়ে গেছে এলাকায়। সিকিমের(Sikkim) হড়পা বানে এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ বহু সাধারণ মানুষ এবং সেনা কর্মী।শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়ি সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন সিকিমে। আর সেখানে কাজ করতে গিয়েই বিপদে পড়েছেন অনেকেই। জানা যায়, ওই এলাকার বাসিন্দা ছত্রপতি রায়ের দুই ছেলে চন্দন রায় ও উজ্জ্বল রায় এবং ওই একই এলাকার জনৈক গোপাল রায় দুর্ঘটনার তিন-চার দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে সিকিমে পৌঁছায়।
পৌঁছে যাওয়ার পরে সেখান থেকে ফোন মারফত যোগাযোগ হয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে । অন্যদিকে, দুর্ঘটনার রাতেও কথা হয় পরিবারের সাথে ।তবে দুর্ঘটনার পর থেকে আর কোনরকম যোগাযোগ সম্ভব হয়ে ওঠেনি তাদের সাথে।ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে তার পরিবার। গোপাল রায়ের স্ত্রী জানান, তার স্বামী পাড়ার কয়েকজনের সাথে কাজ করতে সিকিমে যান কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে আর কোনোভাবেই যোগাযোগ না করতে পেরে অবশেষে দুই নিখোঁজের পরিবার বাধ্য হয়ে থানার দ্বারস্থ হয়েছে।এদিন ওই নিখোঁজার পরিবারের সাথে কথা বলতে গেলে দেখা যায় ছেলের চিন্তায় ও স্বামীর চিন্তায় ক্ষনে ক্ষনে কান্নায় ভেঙে পড়ছে দুই পরিবার সাথে তাঁদের দু:খ ভাগ করতে বাড়ি ভর্তি পাড়া পড়শীরাও ।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন স্থানীয় এলাকায় সঠিক মূল্যে কাজ না পেয়ে বাধ্য হয়ে কখনো ভিন রাজ্যে আবার কখনো এভাবেই নিজের জীবন বাজি রেখে পাড়ি দিতে হয় সিকিমের মতো দুর্গম এলাকায়। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের রেষারেষির মাঝে এভাবেই বাংলার শ্রমিক পরিবারে কখনো দেখা যায় কেউ তার স্বামীকে হারাচ্ছেন আবার কেউ তার ছেলেকে হারাচ্ছেন ।আবার কেউ হারাচ্ছে তার নিজের বাবাকে।তবে বাংলায় কর্মসংস্থানের দাবী রেখে খুব শীঘ্র নিখোঁজদের খোঁজ পাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন পরিবার সহ এলাকার বাসিন্দারা। অন্যদিকে জেলা জুড়ে প্রতিদিন তিস্তা নদীর(Tista River) চরে ভেসে আসছে একের পর এক মৃতদেহ । এখনো পর্যন্ত তাদের পরিচয় জানা যায়নি। এখনো পর্যন্ত মোট ৪০টি দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। অনেকের পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। অনেকের আবার পরিচয় পাওয়া গেছে কিন্তু এমতবস্থায় আদৌ কি ফিরে পাবেন পরিবারের সেই সদস্যদের সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন স্বজনহারা পরিবার গুলি।