নিজস্ব প্রতিনিধি: গত দু’বছর ধরে করোনার করাল গ্রাস একদিকে যেমন কেড়েছে বহু মানুষের প্রাণ। একইসঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। কেউ আবার লকডাউনের শিকার হয়ে বাধ্য হয়েছেন নিজেদের পেশা বদল করতে। অপরদিকে লকডাউন, নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে একঘেয়ে জীবন যাপন করতে করতে বেশিরভাগ স্কুল পড়ুয়া কিংবা বয়স্ক মানুষ মানসিক অবসাদে ভুগছেন।
এসবের থেকে বেরিয়ে এসে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে এবং ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষকে প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করাতে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস- ট্রেকিং যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা অনুভব করাতে একদিনের এক ট্রেকিং-এর আয়োজন করেছিল জলপাইগুড়ি শহরের প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চার বিষয়ক সংস্থা- নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাব অফ জলপাইগুড়ি। সংস্থার উদ্যোগে রবিবার কালিম্পং বন বিভাগের অন্তর্গত নোয়াম রেঞ্জের নোয়াম হিলস-এ সফল ভাবে সম্পন্ন হয় এই ট্রেক। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের ৩৪ জন ছাত্র ছাত্রী, যুবা ও সাধারণ মানুষ এবং ক্লাবের ৬ জন এই ট্রেকে অংশগ্রহণ করেন।
ডুয়ার্সের মানাবাড়ির ঠিক পাশেই ঘিস নদীর উপর দিয়ে হাঁটা শুরু করে নোয়াম পাহাড়ের জঙ্গল বেষ্টিত দুর্গম পথ অতিক্রম করে বারাঘরে গ্রামে এই ট্রেকিং শেষ হয়। চলে পরিবেশ সংরক্ষন নিয়ে এক আলোচনা। বন বিভাগের বনধিকারিকরা এই অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করেন। সফল এই ট্রেকিং এরপর অংশগ্রহণকারীরা ওই অঞ্চলে ক্লিনিং-এ অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহনকারীদের ব্যবহৃত প্লেট ও অন্নান্য খাওয়ার উচ্ছিষ্টাংশ সদস্যরা ব্যাগে করে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহনকারীদের সংস্থার পক্ষ থেকে শংসাপত্র প্রদান করা হয়।
ট্রেকিং সেরে দেবাশীষ কুন্ডু, আদ্রিজা মুখার্জীরা বলেন, গত দু’বছর ধরে একঘেয়ে জীবন আর বিভিন্ন দুঃসংবাদ পেতে পেতে আমাদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছিল। মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আজ আমরা একদিনের এই ট্রেকিং সেরে অনেকটা মানসিক ভাবে হালকা হলাম। একইসঙ্গে দিনভর সবুজ প্রকৃতির মাঝে মুক্ত বাতাস নিয়ে নিজেদেরকে অনেকটাই মানসিক সুস্থ অনুভব করতে পারলাম।
ঘটনায় সংস্থার মুখ্য প্রশিক্ষক ভাস্কর দাস বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল এই সমস্ত মানুষদের মানসিক সুস্থ করার পাশাপাশি প্রকৃতি আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা অনুভব করানো। একইসঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষন ও ট্রেকিংকে জনপ্রিয় করা। সেই লক্ষ নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩৬ জন স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া এবং বয়স্ক মানুষদের নিয়ে এই ক্যাম্প আয়োজন করতে পেরে খুবই আনন্দিত আমরা।