নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৪ সালের এক TET পরীক্ষার্থীর নিয়োগ নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court)। চাকরিপ্রার্থীর নাম পল্লব বারিক। তাঁর আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পল্লব TET পাশ করেননি বলে প্রথমে জানিয়েছিল রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ(WBBPE)। কিন্তু গত বছর আবার তাঁরা জানায়, পল্লব TET পাশ করেছেন। শুধু তা-ই নয় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সে। পল্লব নিজের নম্বর জানতে পেরে এর পর চাকরির দাবিতে মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টে। গত ২১ সেপ্টেম্বর সেই মামলাতেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়(Justice Abhijit Gangopadhay) নির্দেশ দেন, পল্লবকে প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে পর্ষদকে। কিন্তু শুক্রবার মামলাটি আবার তাঁর এজলাসে উঠলে তিনি জানতে পারেন, দু’মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আর তার পরেই বিচারপতি পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে(Goutam Pal) কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দেন, পর্ষদ আদালতের কথা না শুনলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে।
এদিন দৃশ্যতই বিরক্ত প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। TET পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েও যে ভাবে এই সফল পরীক্ষার্থীকে হেনস্থা হতে হচ্ছে, বঞ্চিত হতে হচ্ছে তা দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হন তিনি। তাঁর সব থেকে বেশি ক্ষোভ ওঠে এটা দেখে যে আদালত তাঁকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বললেও, গত ২ মাসে তা কার্যকরই হয়নি। এদিন শুনানির সময় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ‘পর্ষদ কি ইচ্ছে করেই আমার নির্দেশ কার্যকর করেনি? তা-ই যদি হয়, তবে তাঁদের অবিলম্বে ওই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। আর সেটা আজকেই। ৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে। বিকেল ৩টে ২০ মিনিটের মধ্যে আদালতের পূর্ব নির্দেশ মানতে হবে।’
এখন দেখা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশ মানলে, TET পরীক্ষায় পাশ করা পল্লবকে এদিন অর্থাৎ শুক্রবার দুপুর ৩টে ২০ মিনিটের মধ্যেই প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আর তার জন্যই পল্লবকে কলকাতা হাইকোর্ট থেকেই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যে সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনার জল অনেকটাই গড়িয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI ও ED। এমনকি সেই তদন্তের হাত ধরেই গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকেই।