নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতায়(Kolkata) এসে তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে। আর সেখানেই তিনি খোলা মনে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন বাংলার সরকারকে। বলেছিলেন, বাংলায় পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ তাঁর কাছে অন্তত জমা পড়েনি। তাঁর সেই দাবি মুখ পুড়িয়েছিল বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP)। তার জেরে সরব হয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar), দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh), শুভেন্দু অধিকারীরা। সেই ঘটনার পরেই শুক্রবার পুরো পালটি খেলেন তিনি। এখন বললেন, তিনি এমন কোনও কথাই বলেননি। বাংলার পঞ্চায়েতে দুর্নীতি হয়েছে। তাঁর কাছেও সেই অভিযোগ এসেছে। যদিও তাঁর এহেন পাল্টিবাজিতে যত না উপকার হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের তার থেকেও বেশি গেরুয়া শিবির কার্যত হাস্যখোর পদার্থে পরিণত হয়েছে। নজরে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল(Kapil Moreshwar Patil)। এদিন তিনিই কার্যত তাঁরা আগের অবস্থান থেকে পাল্টি খেয়েছেন।
গত বুধবার দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপির বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে যোগ দিতে আসেন মোরেশ্বর। সেখানেই তিনি সাঙ্গাব্দিক বৈঠকে জানান, ‘বাংলায় পঞ্চায়েত দুর্নীতি নিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ জানায়নি। পঞ্চায়েতে দুর্নীতি নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পঞ্চায়েত মন্ত্রকে জমা পড়েনি। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে একাধিক রাজ্যে নামবদলের অভিযোগ আসছে। সেটা নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে এখনই কিছু বলার সময় আসেনি। রাজ্যের ১০০দিনের কাজের টাকা আটকে দেওয়া হয়নি। শুধু স্থগিত করা হয়েছে।’ মোরেশ্বরের এই বক্তব্যই বিজেপির মুখ পুড়িয়েছে। কেননা রাজ্যে পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আসছে বিজেপি। অথচ মোরেশ্বর গতকাল যা জানিয়েছেন তা কার্যত তৃণমূল সরকারকেই সার্টিফিকেট প্রদান করেছে। বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিয়ে এতদিন যা বলে এসেছে তা যে কার্যত অসাড়, তথ্য-প্রমানহীন ও অপপ্রচার সেটাই এখন সামনে চলে এসেছে। আর এটাই বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মুখ পুড়িয়েছে।
মোরেশ্বরের বক্তব্যের জেরে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন সুকান্ত, দিলীপ, শুভেন্দুরা। সুকান্ত জানিয়েছিলেন, ‘উনি প্রতিমন্ত্রী, ওঁর কাছে খবর নেই। কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতমন্ত্রী জানেন রাজ্যের দুর্নীতির কথা।’ দিলীপ ঘোষ আবার জানিয়েছিলেন, ‘বিডিও-র দেওয়া পার্টিতে ফুর্তি করে রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রীয় দল।’ যে যাই বলুক না কেন, গোটা ঘটনায় আদতে বিজেপির মুখই পুড়ছিল। শুক্রবার মোরেশ্বর অবশ্য তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। এদিন তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি এমন কোনও কথাই বলেনি যে বাংলায় পঞ্চায়েত স্তরে কোনও দুর্নীতি হয় না। কোনও দুর্নীতির অভিযোগ আসেনি এমন কথাও আমি কোথাও বলিনি। হ্যাঁ আমার নিজের কিছু বিষয়ে জানা ছিল না। ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কেন্দ্র টাকা পাঠালেও সেই টাকা যথাযথ ভাবে খরচ হয়নি। রাজ্য সরকার তাই ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে পারেনি। আমার কাছেও সেই নিয়ে অভিযোগ এসেছে।’
মোরেশ্বরের এই ভোলবদলকে তীব্র কটাক্ষ হেনেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, ‘এখন উনি কী বললেন সে নিয়ে কিছু যায় আসে না। মানুষ খুব ভাল ভাবেই বুঝতে পেরে গিয়েছেন সত্যিটা কী। কাদের চাপে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এখন ভোল বদল ঘটাচ্ছেন তাও সকলেই বুঝতে পারছেন। গোটা বিষয়টি এখন হাস্যখোর পর্যায়ে চলে গিয়েছে।’